পারভেজ সেলিম
(পর্ব : ০৭)
ভারতের ইতিহাসে প্রথম ইমার্জেন্সীর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় ১৯৭৭ সালের জাতীয় নির্বাচণে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়।ইন্দিরা গান্ধী পরের নির্বাচনে জেতার জন্য তখন মরিয়া।
পাঞ্জাবে জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালা নামের ৩০ বছরের এক তরুণ ধর্মীয় রাজনীতির হিংসাত্বক ও উস্কানীমুলক কথা বলে জনপ্রিয় হচ্ছেন।
ভারতে মুল রাজনীতিতে সাধুর সেই ইমেজকে কাজে লাগাতে চায় কংগ্রেস। এগিয়ে আসলেন পাঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা জ্ঞানী জৈল সিং। প্রথমে ভেবেছিল পাঞ্জাবের রাজনীতির প্রধান তিন কুশিলব আকালী পার্টির প্রকাশ সিং বাদল, হরচান্দ সিং লোঙ্গোয়াল ও গুরচরণ সিং তোহরার মধ্যে ভাঙ্গণ ধরাবেন।
পাঞ্জাবের রাজনীতিকে কংগ্রেসের অনুকুলে নেবার এই পরিকল্পনা তিনি বাতিল করেন। কারণ নতুন আইডিয়া তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তখন।
পাঞ্জাবের ২৩ জন নতুন ধর্মীয় গুরুর একটা তালিকা তৈরি করেন তিনি। সেখান থেকে তুরুপের তাস বের করে, রাজনীতিতে ধর্মীয় খেলা খেলে নিজেদের ফায়দা লুটার সকল বন্দোবস্তো প্রস্তুত করেন।
সেই ২৩ জনের তালিকার একজন হলেন জার্নেল সিং ভিন্দ্রাওয়ালে।

তিনি ছিলেন দমদম তাকশীল নামের খুবই প্রভাবশালী একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৪ তম প্রধান। পরবর্তী কয়েক বছরে পাঞ্জাব ছাড়িয়ে পুরো ভারতবর্ষে তার নাম ছড়িয়ে পড়বে। ভারতের রাজনীতির ইতিহাস বদলে দেবে এই তরুন সাধু।
উত্তাল দামামা শুরু :
এ সময় শিখরা দুটো ধর্মীয় দুগ্রুপে বিভক্ত হয়ে গেছে পাঞ্জাবে। নিরঙ্কারী ও কট্টোর খালসা পন্থী।
নিরঙ্কারী গ্রুপের শুরুটা মাত্র কিছুদিন আগে।
১৮৫১ সালে বাবা দয়াল দাস শিখ ধর্মীয় বিশ্বাসের সংস্কারে কিছুটা হাত দেন। নিরাকার স্রস্টার উপাসনার উপর জোর দেন তিনি এবং গুরু গ্রন্থ সাহেবকে শেষ গুরু হিসেবে মানতে অস্বীকার করেন। বলে এই গ্রন্থ পরীবর্তনশীল।
এরপর অনেকে গুরু গোবিন্দ সিং নয়, বাবা দয়াল দাসকে তাদের নতুন গুরু মানতে শুরু করেন এবং গ্রন্থসাহেবকে একমাত্র গ্রন্থ মানতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে তারাই ‘নিরঙ্কারী শিখ’ নামে পরিচিতি পায়।
আর যারা এমন নতুন সংস্কারের বিরোধী তারাই মুলত ‘খালসা শিখ’। খালসা শিখরা নিরঙ্ককারীদের বেধর্মী বলে ঘোষণা করেন। ভিন্দ্রানওয়ালে ছিলেন দ্বিতীয় গ্রুপে।

১৯৭৮ সালের ১৩ এপ্রিল।
পাঞ্জাবের অমৃতসরে নিরঙ্করীদের একটি অধিবেশন করা অনুমতি দেয় ক্ষমতাশীল আকালী দল। গুরবচন সিং তখন নিরঙ্কারী শিখদের নেতা।
১৩ এপ্রিল ফৌজা সিং নামের একজন কট্টোর খালসা শিখের নেতৃত্বে একটা মিছিল বের হয় স্বর্ণমন্দির হতে।
নিরঙ্করীদের সমাবেশের কাছে এই দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ফৌজা সিং সহ ১৬ জন মানুষ নিহত হন। যার মধ্যে তিনজন ছিল নিরঙ্কারী বাকিরা ছিলেন খালসা শিখ।
এই মিছিলে ভিন্দ্রানওয়ালেও ছিলেন। তিনি পালিয়ে কোন মতে বেঁচে যান।
জৈল সিং আর সঞ্জয় গান্ধীরা হয়ত এমন সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
এই হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে কংগ্রেস খালসা শিখদের সমর্থন করতে লাগলো। ধর্মীয় উন্মাদনাকে রাজনীতির মাঠে পৃষ্ঠপোষকতা করতে শুরু করলো কংগ্রেস।
এসময় ভিন্ড্রানওয়ালের হিংসাত্বক ও উস্কানীমুলক কথায় শিখরা আরো উগ্রবাদি হতে শুরু করলেন। পাঞ্জাব ছাড়িয়ে পুরো ভারতে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে লাগলেন তিনি। বিশেষ করে তরুণরা তার কথা বিশ্বাস স্থাপন করতে শুরু করলেন অন্ধের মতো।
কংগ্রেসের প্রোপাগান্ডা মেশিন এই সময় ভিন্দ্রাণওয়ালেকে শিখ ধর্মের মহানায়ক বানিয়ে ছাড়
ভিন্দ্রানওয়ালে একজন কট্টোরপন্থী খালসা শিখ সাধু ছিলেন। আকালী দলের স্বায়িত্বশাসনের ধারণায় তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি চাইতেন স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র মানে ‘আনন্দপুর রেজুলেশনের’ পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন। তার কাছে এটিই একমাত্র সমাধান।
‘খালিস্তান আন্দোলেন’র কেন্দ্রীয় ব্যক্তিতে পরিনত হন ভিন্দ্রানওয়ালে।
যদিও তিনি নিজে কখনো আলাদা একটা দেশের কথা নিজ মুখে বলেনি তবু আন্দোলনের স্বশস্ত্র যুদ্ধকে তিনি সমর্থন করতেন।

১৯৭৮ সালের ৬ আগস্ট একটি নতুন দল গঠন করা হয়, নাম ‘দল খালসা’। যাদের মুল কাজই হলো ভিন্দ্রানওয়ালেকে প্রমোট করা।
এর পিছনের কড়কাঠি ও অর্থযোগান সবই কংগ্রেসের হাতে। ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেসের ধর্মীয় বি টিম হলো ‘দল খালসা’।
খালসা দলের সদস্যরা সবাই ভিন্দ্রানওয়ালের অনুসারী বলে ঘোষণা দিলেন।
সংবাদ সম্মেলন করে দলের উদ্দেশ্য পরিস্কার করলেন ‘স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠায় তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
যদিও ভিন্দ্রানওয়ালে নিজে কখনো এই দলের সাথে সম্পৃক্ততার কথাও স্বীকার করেননি। স্পষ্ট অস্বীকারও করেননি।
১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস পরাজিত হয়েছিল কিন্তু মাত্র দুই বছরের মধ্যে জনতা দলের সরকারের অবস্থা টালমাটাল হয়ে যায়। যেকোন সময় পড়ে যাবে।
এসময় নতুন ধর্মীয় রাজনৈতিক দল ‘দল খালসা’ নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই এর একটা সুযোগ পায়।
গুরুদুয়ারা পরিচালনা কমিটির নির্বাচণ হয় ১৯৭৯ সালে। ‘এসজিপিসি’র সেই নির্বাচনে ভরাডুবি হয় ‘দল খালসার’। মাত্র ৪ টা সিট পেয়েছিল তারা।
বোঝাই যাচ্ছে কংগ্রেসের ‘দল খালাসা’ বানানোর এই চালাকি শিখ জনগন বুঝে ফেলেছিল।
আকালী দল যদিও এই নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছিল কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয়না তাদের সুখ।
১৯৭৯ সালে জনতা জোটের পতন হলে নতুন নির্বাচন অনিবার্য হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালে সাধারণ নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধিকে ব্যাপক সমর্থন করেন ভিন্দ্রানওয়ালে।

এবার ভিন্ড্রানওয়ালার ধর্মীয় ইমেজকে কাজে লাগিয়ে পাঞ্জাবে সরাসরি রাজনীতি শুরু করে কংগ্রেস।
এরফলে কংগ্রেস আশা করেছিল ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মীয় সকল পাঞ্জাবী ভোটারকে তারা নিজের দলে ভেড়াতে পারবে।
ধর্মভিত্তিক আকালী দলকে পরাজিত করার জন্য কংগ্রেসের একমাত্র হাতিয়ার তখন ভিন্দ্রানওয়ালে। কিন্তু গল্প তো কংগ্রেসের হাতে নয় লেখা হচ্ছে অন্যকারো হাতে।
৪ আগস্ট, ১৯৮২ সালে রাজনীতির গল্পে নতুন মোড় নেয়।
কংগ্রেস ও ভিন্ড্রানওয়ালে জোটে আকালী দল কোনঠাসা হয়ে পড়ছিল পাঞ্জাবে। এবার তারা রাজনীতির মাস্টারস্ট্রোক খেলে।
‘ধর্মযুদ্ধ মোর্চা’ নামে নতুন একটি মঞ্চ তৈরি করে। প্রধান আকর্ষণ হলো জার্নেইল সিং ভিন্ড্রারওয়ালে ও আকালি দল প্রথমবারের মতো মহাজোট গঠণ।
কংগ্রেসের চাইতে আকালী দলের প্রতি আস্থা ছিল খালিস্তান পন্থীদের। এতদিন ব্যাটে বলে হচ্ছিল না। এবার ঘটে গেল।
কংগ্রেসের পর ভিন্ড্রানওয়ালের উপর শুরু হলো আকালী দলের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা।
‘ধর্মযুদ্ধ মোর্চা’ শেষ পর্যন্ত ভিন্ড্রানওয়ালের সেনাবাহিনীর মতো কাজ করতে শুরু করেছিল।
আইন অমান্য করার যেন এক আন্দোলন শুরু করেছিল ভিন্দ্রানওয়ালা ও তার সমর্থকেরা। সরকারের ভিতরে ভিন্ড্রানওয়ালের সরকার চলতো।
তার গোটা রাজ্যে আতংক ও ভয়ের রাজ্য কায়েম করতে সমর্থ হয় কয়েক মাসের মধ্যেই।
‘আনন্দপুর সাহেব রেজুলেশন’কে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করাই ছিল এই মঞ্চের উদ্দেশ্য।

এর মাস খানিক আগে ১৯ জুলাই,১৯৮২ সালে ভিন্ড্রানওয়ালে স্বর্নমন্দিরে গিয়ে পুরোপুরি আবাস গেড়েছেন।
কয়েকমাস পর শিখদের ন্যায়বিচার ও সমসাময়িক বিষয়ের সর্বোচ্চ কতৃপক্ষ হিসবে পরিচিত ‘আখাল তকথ’ এ গিয়ে বসেন।
এখান থেকে তার বিচারকার্য ও ‘ধর্মযুদ্ধ মোর্চা’র সকল কাজ পরিচালনা করতে থাকেন।
ভিন্দ্রানওয়ালের ততদিন একজন কঠিন ন্যায়বিচারক হিসেবে সাধারণ শিখদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
যে সবার সমস্যার দ্রুত সমাধান দিয়ে দিতেন এবং দুই পক্ষ তা মানতে বাধ্য হত।
জমি, বিয়ে, মারামারি কিংবা যে কোন বিরোধের আইনী কাঠামোর বাইরে গিয়ে তিনি সমাধার দিয়ে দিতেন। খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হতো বলে তার জনপ্রিয়তা হুহু করে বাড়তে থাকে।
কখনো কখনো সমাধান খুবই নির্মম হতো। কারো কারো নামে মৃত্যুদন্ডও দিতেন তিনি এই আকাল তখতে বসে।
এর ফলে এসময় রাজ্য জুড়ে হিংসাত্বক ঘটনা বাড়তে থাকে খুব দ্রুত। ইতিমধ্যে ১৯৮০ সালের নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধী জয় লাভ করে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

১৯৮১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর।
একটি গাড়ি যাচ্ছিল পাঞ্জাবের পটিয়ালা থেকে জলন্ধরের দিকে। গাড়িতে যিনি বসে আছেন তিনি হলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বর্তমানে পাঞ্জাবী কেশরী পত্রিকার সম্পাদক। নাম লালা জগৎ নারায়ণ।
হঠাৎ দু্ই বিন্দুকধারী মোটরসাইকেল নিয়ে জানালার পাশ দিয়ে গুলি করে প্রকাশ্যে হত্যা করেন লালাকে।
তার অপরাধ পাঞ্জাবে শিখ- হিন্দু এবং পাঞ্জাবী-হিন্দি ভাষার যে মেরুকরণ শুরু হয়েছে, লালা জগৎ নারায়ণ হিন্দি ও হিন্দুর পক্ষে কাজ করছেন।
ফলাফল জীবন দিতে হলো তাকে। হত্যার জন্য দায়ী করা হলো ভিন্ড্রানওয়ালাকে।
লালার হত্যাকাণ্ডে এবার সক্রিয় হলো পাঞ্জাব পুলিশ। জার্নেইল সিং ভিন্ড্রাওয়ালের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলো। তখন হরিয়ানার কোনো এক গ্রামে অবস্থান করছিলেন তিনি।
কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের তৎকালীণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্ঞানী জৈল সিং আবারো সামনে আসেন।
তার হস্তক্ষেপে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল বিষ্ণু ভিন্দ্রাণওয়ালেকে সাবধান করে দেন। পাঞ্জাব পুলিশ পৌঁছানোর আগেই হরিয়ানা পুলিশ জার্নেইলকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল।
বোঝাই যাচ্ছে কংগ্রেস সরকার কিভাবে নিজেরাই বিশাল করে তুলছেন ভিন্ড্রানওয়ালেকে। নিজের বানানো মনস্টারের কাছে একদিন নিজেদেরই ধরা খেতে হবে। খুব দ্রুত সেই দিনটি ঘনিয়ে আসতে শুরু করে।

২৩ এপ্রিল,১৯৮৩
প্রাদেশিক পুলিশের ডিআইজি আবতার সিং আটওয়াল স্বর্নমন্দিরে গেছেন প্রার্থনা করতে।
মন্দিরের সিঁড়িতেই গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। দুঘন্টা লাশ পড়ে ছিলো রক্তাত্ব সিঁড়িতে।
ভিন্ড্রানওয়ালের অনুমতি ছাড়া কেউ লাশ ধরতে সাহস করছিলেন না। পুলিশদের মনোবল পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছিল। কেউ সাহস করে এগিয়ে আসেননি।
শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী নিজে ফোন করে ভিন্ড্রানওয়ালের কাছে অনুমতি নেন পুলিশের লাশ সরানোর। অবতার সিং এর অপরাধ তিনি ভিন্ড্রানওয়ালের সহিংস কর্মকান্ড সমর্থন করতেন না।
বোঝাই যাচ্ছে সরকারের ভিতর আরেক সরকার রাজ্য চালাচ্ছে। যার প্রধান হচ্ছেন ভিন্ড্রানওয়ালে। রাজ্য সরকারের চাইতে তারাই বেশি শক্তিশালী। তার কথাই রাজনীতিবিদ, পুলিশ, প্রশাসন সবাই উঠছেন আর বসছেন।
ভিন্ড্রানওয়ালে পাঞ্জাবে যখন এক নৈরাজ্য ও ভয়ের রাজত্ব কায়েম করতে সমর্থ হন তখন ঘটে আরেক ঘটনা।
একটি হিন্দু বাস রাস্তায় আটকিয়ে ৫ জন হিন্দুকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। অভিযোগ ভিন্দ্রানওয়ালের সন্ত্রাসীরা এই অপকর্ম করেছে।
এই হত্যাকান্ডে ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
১৯৮২-১৯৮৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র দুই বছরে ১২০০ হিংসাত্বক ঘটনা ঘটে পাঞ্জাবে। নিহত হয় ৪৫০ জন।
পাঞ্জাবে রাষ্টপতি শাসন চালু করতে বাধ্য হল কংগ্রেস সরকার।
ভিন্ড্রাণওয়ালেকে গ্রেফতার করা ছাড়া ইন্দিরা গান্ধীর আর কোন রাস্তা খোলা থাকলো না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কি পারবেন এই শিখ সাধুকে গ্রেফতার করতে?
কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন তিনি? আর কে এই জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে?
(চলবে..)
পারভেজ সেলিম
লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকর্মী
I do not even know how I ended up here, but I thought this post was good.
I don’t know who you are but certainly you’re
going to a famous blogger if you are not already 😉 Cheers!
Hi! I’ve been reading your weblog for some time now and finally got
the courage to go ahead and give you a shout out from
New Caney Texas! Just wanted to say keep up the great job!
about tadalafil 20mg cialis dosage levels tadalafil or cialis
viagra bottle label sildenafil dose massima viagra drugs
natural viagra food sildenafil by cipla viagra discounted pricing
tadalafil therapeutic level 5mg tadalafil image tadalafil dose uk
sildenafil 50mg 100mg viagra gel sildenafil medana
generic cialis identification tadalafil generique france pillole cialis prezzo
tadalafil cyprus cialis joint pain cialis best price
female viagra drug costo del viagra viagra stroke risk
viagra legal egypt viagra and nitroglycerin sildenafil 50mg effects
achat cialis tadalafil half life generika cialis cialisde2022
generic tadalafil price cialis acid reflux tadalafil kopen
outdated viagra pills sildenafil 50mg dosage viagra funktion
cialis dose sizes achat cialis generic cialis uk
cialis pricing tadalafil pde5 tadalafil cims india
sildenafil citrate profile measuring viagra sales nice cks viagra
viagra pill walgreens viagra pdf sildenafil citrate camber
5mg tadalafil daily tadalafil cialis 5mg avanafil vs tadalafil
tadalafil cinfa tadalafil dosage 20mg cialis doses available
tadalafil en sildenafil cialis viagra levitra tadalafil aurovitas 5mg
viagra tablet viagra pentru femei viagra hatóanyaga
cialis bph effectiveness daily cialis reddit viagra cialis säljes
jamp tadalafil 20mg tadalafil cipla reviews cialis free coupon
tadalafil soft sales classification of tadalafil research chemicals tadalafil
about viagra pills sildenafil citrate supplements buy viagra sydney
precio pastillas levitra levitra by mail levitra and cialis
cialis testicular pain generic cialis images prix cialis cialisfr2022
levitra tablete cena levitra psychological ed levitra shop
cialis tadalafil mg tadalafil for men cialis tadalafil c20
patent expiration viagra goodrx sildenafil reviews sildenafil otc usa
teva viagra pricing viagra czas działania over counter viagra
tadalafil costco cialis discussion forum cheap tadalafil tablets
levitra malaga levitra soft tabs levitra vai cialis
tadalafil bula 5mg goodrx cialis tadalafil cheapest price
sildenafil tabs 20mg sildenafil dosage goodrx advil and viagra
viagra mg 0.36 viagra comprare sicuro super viagra
nc viagra medicaid sildenafil dosage 50mg viagra action
sildenafil 100mg kopen buy viagra california viagra infarctus