খালিস্তান: প্রবাসী সরকার ও পাকিস্তানের মদদ


পারভেজ সেলিম ।।


(পর্ব : ০৬)

‘খালিস্তান’ শব্দটি ১৯৪০ সালে প্রথম সামনে আসে। লাহোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ড.ভীর সিং ভাট্টি এই নামটির প্রস্তাব করেন শিখদের জন্মভুমির জন্য।

সত্তরের দশকে দেশের বাহির থেকে চরণ সিং পানসি ও জগদিদ সিং চৌহান (১৯২৯-২০০৭) খালিস্তান আন্দোলনকে আরো বেগবান করেন।

এরফলে ভারত ছাড়িয়ে পৃথিবীর ভিন্ন দেশেও ছড়িয়ে পড়ে শিখদের স্বাধীন দেশের আন্দোলন।

জগদীদ সিং চৌহান : খালিস্তানের প্রেসিডেন্ট বলে পরিচয় দিতেন

জগদিদ সিং চৌহান লন্ডণ ও পাকিস্তান চষে বেড়াতে শুরু করেন।

চৌহান ‘কাউন্সিল অব খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজে এর প্রেসিডেন্ট হন।

বলবীর সিংকে ‘কাউন্সিল অব খালিস্তানে’র সেক্রেটারী বানানো হয়।

১৯৭৯ সালে পাকিস্তানে নেতা ভুট্টুর সাথে দেখা করেন চৌহান। যেখানে ‘রিপাবলিক অব খালিস্তানে’র প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পরিচয় দেন নিজেকে।

এরপর তিনি খালিস্তানি পাসপোর্ট, খালিস্তানি ডলার আর পোষ্ট স্ট্যাম ইস্যু করেন।

এসময় চৌহান প্রবাসী সরকার হিসেবে লন্ডণ থেকে তার এসব কর্মকান্ড পরিচালিত করছিলেন।

এসময় কানাডা, ইংল্যান্ড, আমেরিকায় এই আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়।

জুন, ১৯৮৪ সালে বিবিসির এক সাক্ষাতকারে চৌহান বলেছিলেন, ‘খুব দ্রুত মিসেস গান্ধি ও তার পরিবারের গলা কাটা হবে এবং তা করবে আমাদের শিখরাই’।

এবং ৩১ অক্টোবর,১৯৮৪ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি তার শিখ দেহরক্ষীর গুলিতেই নিহত হন।

ব্যাপারটা কাকতালীয় নাকি চৌহানের এর সাথে গান্ধি হত্যাকারিদের যোগাযোগ ছিল কিনা তা প্রমানিত হয়নি।

খালিস্তানী পাসপোর্ট

১৯৭৩ সালে আকালী দল ‘আনন্দপুর রেজুলেশন’ পাশ করে ।

এর ফলে বড় দাগে যা হয় তা হলো শিখ সম্প্রদায় হিন্দুর ধর্মের মধ্যে থাকবে এবং চন্ডিগড় পাঞ্জাবের অন্তর্ভুক্ত হবে।

রেলওয়ে, কারেন্সি বৈদেশিক সম্পর্ক ও সেনাবাহিনী দেখভাল করবে কেন্দ্র সরকার আর বাকি সবকিছু থাকবে রাজ্য সরকারের হাতে।

একদিকে ভারত সরকার পাঞ্জাবের সমস্যা মেটাতে নাস্তানাবুদ হচ্ছে, অন্যদিকে পাকিস্তান খালিস্তান পন্থীদের সহযোগিতা করছিল।

১৯৭০-১৯৮০ সাল পর্যন্ত এই আন্দোলনকে প্রকাশ্যে সহায়তা করছিল পাকিস্তান। খালিস্তান বিদ্রোহীদের সরাসরি অস্ত্রের জোগান দেবার অভিযোগ আছে।

কিন্তু কেন জুলফিকার আলী ভু্ট্টুর পাকিস্তান এমন নগ্নভাবে খালিস্তান আন্দোলনকে সাপোর্ট করছিলেন?

এক সাক্ষাতকারে সেটা তিনি পরিস্কার করে বলেছিলেন, ‘ভারত থেকে আমরা এক বাংলাদেশ কেটে নেবো’।

বোঝা যায় ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হওয়ার প্রতিশোধ নিতে চান তিনি। আর সেটা ভারত থেকে পাঞ্জাবকে আলাদা করে।

খালিস্তানী পাসপোর্ট

দেশ ও দেশের বাহিরের সহায়তায় খালিস্তান পন্থিরা তাই ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে।

সাম্প্রদায়িক খেলায় মেতে ইন্দিরা গান্ধির কংগ্রেস।

আর পাঞ্জাবের ভিতরেই গড়ে ওঠে জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের মতো এক ট্রাজিক সাধু।

কে এই শিখ সাধু জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে?

 (চলবে..)



‘খালিস্তান আন্দোলন’ আরো কয়েকটি পর্ব পড়ুন :

পর্ব : ০১ : খালিস্তান: শিখদের স্বপ্নের স্বাধীন দেশ

পর্ব : ০২ : গুরু নানক: যার হাতে নতুন ধর্মের শুরু

পর্ব : ০৩ : দশ গুরু: শিখ ধর্ম যাদের হাতে গড়ে উঠেছে

 পর্ব : ০৪ : পাঞ্জাবের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও দেশভাগের প্রবঞ্চনা!

 পর্ব : ০৫ : পাঞ্জাব: দেশভাগের পরের উথাল পাতাল রাজনীতি

 পর্ব : ০৬ : খালিস্তান: প্রবাসী সরকার ও পাকিস্তানের মদদ

পর্ব : ০৭ : জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে: এক সাধুর উত্থান ও ট্রাজিক পতন

 পর্ব : ০৮ : কে এই জার্নেইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে?

পর্ব : ০৯ : অপারেশন ব্লু স্টার: ইন্দিরা গান্ধির শেষ যুদ্ধ !

পর্ব : ১০ : ইন্দিরা গান্ধী হত্যা: শিখদের হাতেই জীবন উৎসর্গ!

৬ thoughts on “খালিস্তান: প্রবাসী সরকার ও পাকিস্তানের মদদ

  1. pg panda555 เว็บไซต์เกมออนไลน์ ที่ประสิทธิภาพแน่นแบบเต็มระบบเยอะที่สุด pg slot พร้อมบริการเพื่อนฝูงๆทุกคนแล้ว เป็นอีกหนึ่งผู้ให้บริการเลย ที่ได้รับคำชื่นชม จากผู้เล่น

  2. WWW555 สล็อตเว็บตรงเกมสล็อตออนไลน์ในตอนนี้ ที่จะทำให้คุณได้เข้าถึง เว็บไซต์ ตรง 100 กับเกมออนไลน์ซึ่งสามารถทำเงินได้อย่างแท้จริง PG SLOT ให้คุณได้เจอกับเกมสล็อตออนไลน์

  3. บุญ มี สล็อต สล็อตเว็บไซต์ตรงเปิดใหม่ปัจจุบัน บุญมีสล็อต pg slot ยอดเยี่ยมเว็บไซต์เกมพนัน เว็บไซต์เกมทำเงินมาแรง ไม่ผ่านเอเย่นต์ ที่มีโปรโมชั่นพิเศษเยอะมาก บริการดีมากอีกด้วย

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x