যদ্যপি আমার গুরু: গুরু-শিষ্যে এক অসাধারণ বয়ান

 


পারভেজ সেলিম

পারভেজ সেলিম ।। 


 

গুরুর প্রতি শিষ্যের ভক্তি ! ইহা কোনভাবে নতুন কোন ঘটনা নহে। গুরুকে ভক্তি করিয়া নানানজন নানা কিছু করিয়াছেন কিন্তু বাংলা সাহিত্যে গুরুর উপর ১১০ পৃষ্ঠার একখানা মাত্র বই লিখিয়া তাহাকে কিংবদন্তি বানাইয়া ফেলাইবার ঘটনা আর মনে হয় দুইখানা নাই। ইহা লইয়াও বিতর্ক হইবার পারে ! তয় শুধু একখানা বই হিসাবে যদ্যপি আমার গুরু পড়বার পারলে পয়সা উশুল হইবে বইলা আমার ধারনা। বইখানার একটু ক্যানভাস করবার চাই! পড়েন !! পড়লে ফায়দা আছে ! তয় অধ্যাপক রাজ্জাককে নিয়ে আহমদ ছফার লেখা এই বইখানাতে কি কি পাইবেন তার একখানা লিস্টি দিবার পারি !

 

কে আহমদ ছফা ও আব্দুর রাজ্জাক :

আগে কই আহমদ ছফা কে আছিল? ড. সলিমুল্লাহ খান বলতেছেন কাজী নজরুল ইসলামের পরে বাংলা সাহিত্যে আহমদ ছফাই শ্রেষ্ট মুসলমান লেখক। আবার মি. খানের বয়ানে জানতেছি তার জীবিতকালে অনেক জ্ঞানীগুনি আহমেদকে পাগল বলিত। পাগল হওয়াও হয়ত গর্বের কারন সেইসময় মিশেল ফুকো নামের আরেকজন ফরাসি পাগলামো ও সভ্যতা নামের একখানা বই লিখিয়া দেখাইছে পাগলরা কেন গুরুত্বপূর্ন আর সমাজে কে কে পাগল? মোদ্দা কথা আহমদ ছফা হইল লেখক ! তার গুরুকে লইয়া একখান বই লিখছেন এবং কেন তিনি আব্দুর রাজ্জাকের প্রতি এত মুগ্ধ হইলেন তাহার বয়ান করতেছেন ..

 

রাজ্জাক সাহেবের প্রতি প্রাণের যে একটা নিষ্কাম টান অনুভব করেছি, ও দিয়েই অনুভব করতে চেষ্টা করি এথেন্স নগরীর তরুনরা দলে দলে কোন অমৃতের আকর্ষনে সক্রেটিসের কাছে ছুটে যেতো

 

ছফার বয়ানে আরো জানিবার পারিতেছি দিল্লি থেকে প্রকাশিত খুশবন্ত সিং সম্পাদনাকৃত ইলাস্ট্রেটেড উইকলিরপ্রতিবেদক আব্দুর রাজ্জাককে গ্রীক দার্শনিক ডায়োজিনিস এর সাথে তুলনা করেছিলেন ছফা আরো জানাইতেছেন ঢাকায়ও অনেকে রাজ্জাককে ডায়োজিনিস বলে ডাকতেন।

 

তাই ছফা ছুটে যাইতেন বাংলার সক্রেটিস বা ডায়োজিনিস প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের কাছে। তাহার কথা শুনতেন আর মুগ্ধ হইতেন। তাহার জ্ঞানের ভান্ডার দেইখ্যা আর নিজেকে আরো পাগল বানাইতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষককে লইয়া ছফার মুল্যায়ন হইতেছে…

 

 

  •   রাজ্জাক সাহেব মনেপ্রাণে একজন খাঁটি সেক্যুলার মানুষ ছিলেন ।

  •  রাজ্জাক বাঙ্গালী মুসলমানের দৃষ্টি দিয়ে পৃথিবীকে দেখেছেন এবং বিচার করেছেন ।

  • এ ট্রটস্কিয়াইট এ্যামাং দ্যা মুসলীম লীগারস হচ্ছেন আব্দুর রাজ্জাক ।

  • রাজ্জাক সাহেব বাঙালী মুসলমান সমাজের ঐতিহাসিক অহংবোধের প্রতীক বললে অধিক হইবে না ।

  • তার চরিত্রের এক রৈখিকতা অনাপোসি মনোভঙ্গি এবং একান্ত মুসলমান সমাজ ভিত্তিক ধ্যান-ধারণার মধ্যে একটা প্রবনতা অনায়াসে লক্ষ্য করা যাবে, সেগুলো যতটা নিরপেক্ষ ইতিহাস অনুধাবনের ফল ততটা হিন্দু সমাজের প্রতিক্রিয়া সজ্ঞাত অভিব্যক্তি

ছফা বয়ান করতেছেন এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠি যে তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ঘটনার সাথে জড়িত, রাজ্জাক সাহেব সেই তিনটি ঘটনার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হইছেন। পাকিস্তান আন্দোলন,ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম । তার রাজনৈতিক পরিচয়ে ছফা বলতেছেন..

 

 

রাজ্জাক সাহেব মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তান দাবির সমর্থক ছিলেন। সেই পরিবেশ পরিস্থিতে তিনি মনে করেছিলেন পাকিস্থান প্রতিষ্ঠিত হলেই বাংলার মুসলমান সমাজের উপকার হবে

 

ছফা দাবি করিতেছেন বাংলাদেশকে পাকিস্থান থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার ধারনাটিও রাজ্জাক সাহবের মস্তক থেকে এসেছিলতার বয়ানে আছে খুশবন্ত শিং এর পত্রিকায় আব্দুর রাজ্জাককে ছয় দফার মুল প্রণেতা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

 

ছফার এসকল কথা নিয়া বির্তক হইছে এবং এখনও হইতেছে। তবু এই্ বইখানা একখানা মধুর চাক বলিয়া আমার মনে হইছে ।


আরো পড়ুন : বখতিয়ার খলজি: বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক

আব্দুর রাজ্জাক বই লেখেন নাই কেন ? :

প্রশ্ন হইতেছে এত জ্ঞানী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক উল্লেখ করার মতো কিছু্ লেখেন নাই কেন ? তার বিবিধ জ্ঞানের মিথ শুধু মুখে মুখে ক্যান ! বিরোধীরা বলেন রাজ্জাক পুরো বই পড়তেন না, বইয়ের সারাংশ পড়ে জ্ঞান কপচাইতেন । এত প্রজ্ঞাবান মানুষ কেন তেমন কোন বই লেখেন নাই

 

ছফা উত্তর দিতেছেন…

যৌবনে যে মানুষ ট্রটস্কির থিয়োরি অব পার্মানেন্ট রেভুল্যুশন বাংলা এবং অবন ঠাকুরের ইংরেজি অনুবাদ করেছেন, সেই মানুষের পক্ষে অন্যকোন মামুলি বিষয়ে কাজ করা অসম্ভব ছিল ।তার মানসিক সূক্ষতার এমন একটা সমুন্নত উত্তরণ ঘটেছিল, সেখান থেকে তৎকালীন বিদ্যাচর্চার স্তরটিতে নেমে আসা সত্যি সত্যি দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো

 

আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে ছফা যা বলতেছেন তা তার স্মৃতি থেকে বলতেছেন। সব কথা যে রাজ্জাক সাহেবে নাও হবার পারে তা স্বীকার করে নিয়েছেন । তিনি কবি আলাওল থেকে ধার কইরা সাফাই গাইতেছেন গুরু মোহাম্মদে করি ভক্তি, স্থানে স্থানে প্রকাশিব নিজ মনো উক্তি তাই কোন মনীষী বা কোন বিশেষ ঘটনা সম্পর্কে রাজ্জাক সাহেবের কথায় ছফার নিজের ছায়া থাকবার আশংকা উড়াইয়া দেওয়া যায় না ।

 


 


 

রবীন্দ্রনাথ নিয়ে রাজ্জাক : 

ছফার বয়ানে জানবার পারি রাজ্জাক সাহেব বিখ্যাত আর অখ্যাত মানুষদের ব্যাপারে কি কি মন্তব্য করেছেন । রবীন্দ্রনাথ দিয়া শুরু করবার পারি । ছফার বয়ানে রাজ্জাক সাহেব বলতেছেন..

 

 

  • রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা আছিল ঠিকই। বাংলা ভাষাটা তো রবীন্দ্রনাথের হাতেই পুষ্ট হইছে । এক হাতে বিচিত্র বিষয় নিয়া লেখছেন এইটা রবীন্দ্রনাথের সবচাইতে বড় ক্রেডিট ।

  • রবীন্দ্রনাথের যদি বিদ্যাসাগরের মতো মানুষদের সাথে তুলনা করেন হি কামস নো হোয়ার নেয়ারার টু দেম 

 

  • রবীন্দ্রনাথ বড় লেখক, মানুষ হিসেবে রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাসাগর কিংবা তার মতো মানুষদের ধারের কাছেও আসতে পারবেনা । বড় লেখক আর বড় মানুষ এক জিনিষ নয় । বড় লেখকের মধ্যে বড় মানুষের ছায়া থাকে । বড় মানুষেরা আসলেই বড় মানুষ ।

 

নজরুলকে নিয়ে রাজ্জাক সাহেবের উচ্ছাস :

  •         বৈষ্ণব কবিদের পর কোন গীতিকারই নজরুলের মতো জনচিত্তে অমন আসন লাভ করবার পারে নাই

  • প্রেমেন মিত্র নজরুল কে নিয়ে বলছেন বজ্র বিদ্যুৎ ফুল এই তিনে নজরুল

বঙ্কিম ও রাজ্জাক :

বঙ্কিমরে রাজ্জাক সাহেব খুব একটা দেখবার পারতেন বইলা মনে হইছেতে না !

 

বঙ্কিমের বিষয়বস্তুর সাথে মুসলমানি পুঁথির বিষয়বস্তুর তুলনা করলে ডিফারেন্সটা সহজে বুঝতে পারবেন। পুথিঁর বিষয়বস্তু এক্কেরে সেক্যুলার, কিন্তু চিন্তাপদ্ধতি মধ্যযুগীয় । বঙ্কিমের চিন্তা আধুনিক কিন্তু বিষয়বস্তু ধর্মীয় ।

  বঙ্কিমের একটা ইনফিরিয়টি কমপ্লেক্স আছিল ।তার পড়াশোনা অইছিল মোসলমানের টাকায়।মুহসিন ফান্ডের টাকায় তিনি লেখাপড়া করছিলেন ।মুসলমানের বিরুদ্ধে কলম ধইরা সেই ঋণ শোধ করছেন ।

 রামকৃষ্ণ বঙ্কিমকে বলেছিল, তোমার মনে এত অহংকার কেন?

সমর সেন বাংলা ভাষায় না লেখায় তিনি দু:খ পাইছেন

 

  • দু:খের কথা হইলো সমর সেন তিরিশ বছরের পর আর কোন কিছু বাংলা ভাষায় লেখেন নাই যাও লিখছেন ইংরেজিতে। এইটা বাংলা ভাষার জন্য একটা গ্রেট লস । এই একটা মানুষ যার চিন্তা ভাবনার রেঞ্জ আছিল অনেক বড়।

 

ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন সবচেয়ে বড় মানুষ :

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে রাজ্জাক অনেক বড় মানুষ মনে করছেন। আর রাজা রামমোহন রায়কে তিনি এক্কেবারে উড়াইয়া দিছেন !

 

  •  এন্টায়ার নাইটিনথ সেঞ্চুরীর মধ্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর অইল সর্বাংশে একজন বড় মানুষ । বাই ফার হি ইজ দ্যা বেস্ট।

  • রামমোহনরে বিলাত পাঠানোর সময় রাজা টাইটেল দিলেন রাহাদুর শাহ । কিন্তু বাহাদুর শাহরই কোন রাজত্ব আছিল না। রামমোহন হেই টাইটেল গোটা জীবন আগলাইয়া রাখলেন । গৌড়িয় ব্যাকারণ হইলো তার বড় অবদান।

বঙ্গবন্ধু ও  জিন্নাহ :

বঙ্গবন্ধুকে নিয়া তার তেমন কথা এইখানে পাওয়া যায় না। যতটুকু পাওয়া যায় তা খুবই যৎসামান্য।

 

  • ইতিহাস শেখ সাহেবেরে স্টেটসম্যান অইবার একটা সুযোগ দিছিল, তিনি এইটা কামে লাগাইবার পারলেন না ।

 

ভাইসরয় লর্ড রীডিং এর উদ্দৃতি দিয়া আব্দুর রাজ্জাক গান্ধী আর জিন্নাহর চরিত্র বয়ান করতেছেন…

·         গান্ধী সর্ম্পকে রীডিং বলতেছেন এই লোকের সংগে আমাগো ব্যবসা জমবে ভালো

·         জিন্নাহ সম্পর্কে রীডিং বলতেছেন এই লোক এক্কেবারে বেয়াড়া, উই উইল হ্যাভ ট্রাবল ইন হ্যান্ডেলিং টু জিন্নাহ

মুনীর চৌধুরী ও সালমান রুশদী : 

মুনীর চৌধুরীকে নিয়ে তার মতামত হইতেছে মুনীরের মত মানুষ আমি খুবই কম দেখছি । তার মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ কোনো লেশ কোনো তিন দেখিনাই । অত্যন্ত উচ্চ মানসিকতার মানুষ আছিল মুনীর

 

সালমান রুশদীর ইংরাজি লেখা দেইখা তিনি মুগ্ধ হইছিলেন সালমান রুশদী ইংরেজি ভাষার ইডিয়াম ব্যবহার পদ্ধতি এক্কেবারে পাল্টাই ফেলাইছেন । এতদিন পর ইংরেজরা ইংরেজগো উপর প্রতিশোধ লইবার লাগছে

 

সাথে তিনি এটাও জানাইতেছেন ইংরেজ আমলে ইন্ডিয়ায় যারাই ইংরেজি লিখেছেন তার মধ্যে একমাত্র গান্ধী ছাড়া আর কারো লেখাই টিকবো না

 

আধুনিক বাংলা সাহিত্য ও রাজ্জাকের বয়ান :

আর আধুনিক বাংলা গদ্যের বিকাশ হইল নাইনটিনথ সেঞ্চুরির সবচাইতে মুল্যবান অবদান এইটা হইল রাজ্জাক সাহেবের সার কথা । চাঁদ সওদাগরকে তো তিনি বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ট চরিত্রের মর্যাদা দিছেন ..

 

·        চাঁদ সওদাগের মতো শক্তিশালী চরিত্র বাংলা সাহিত্যে একেবারে বিরল ,মাইকেলের মেঘনাধকে চাঁদ সওদাগরের পাশে ম্লান দেখায়।বেবাক বাংলা সাহিত্যে এই রকম শিঁরদাড়ার মানুষ একটাও দেখছেন ? চাঁদ সওদাগরের এই যে ঋজুতা এইডা হইল সমুদ্র-বানিজ্য শক্তির প্রতীক ।

  •    মোহিতলাল মজুমদার কবি জসীমুদ্দিনরে টিটকারি করতেন বইল্যা রাজ্জাক সাহেব একদিন খ্যাইপ্যা গিয়া বলতেছেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যদি জসীমুদ্দীনের উপর এক অধ্যায় লেখা হয়, আপনেরে নিয়া লেখা হইবো মাত্র চার লাইন। তার বয়ানে জানবার পারি রবীন্দ্রনাথের বাপের সম্পর্কে রামকৃষ্ণ বলতেছেন যে মানুষ চৌদ্দটা পোলা মাইয়া জন্ম দিছেন হে সাধনা করবার সময় পাইলো কখন ।

 

ড.মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, কাজী মোতাহার হোসেন, কামাল হোসেন, হেনরি কিসিঙ্গার ,হ্যারল্ড লাস্কি ,এস এম সুলতান সহ আরো কত মানুষের কথা যে আসছে বইতে।এ্ইটা এপিক । যাকে তিনি বড় ভাবছেন তার ব্যাপার প্রচুর কথা কইছেন আর যাকে বড় ভাবেন নাই তার ব্যাপারে তেমন কিছু কন নাই । নাকি কইছেন ? সেটা ছফা সাহেব লেখেন নাই সেইটা একটি ধাঁধা ।

 

ধর্ম নিয়ে রাজ্জাকের বয়ান : 

ধর্ম নিয়া রাজ্জাক সাহেব এই বইয়ে যা কইছেন তার সারমর্ম হইল ইসলাম ধর্মের মধ্যে সেরা !! তিনি বয়ান করতেছেন…

 

ইসলাম ধর্মের সংগে অন্য ধর্মের একটা বড় একটা পার্থক্য এইখানে যে ইসলাম ধর্মেও পরকালের গুরুত্ব স্বীকার করা অইছে, কিন্তু ইহকালের গুরুত্ব অস্বীকার করা অয় নাই। ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখেরাতের কথা ইসলামে যেভাবে বলা হইছে অন্য কোন ধর্মে সেরকম নাই

 

মুসলমানরা এদেশে আইস্যা মসজিদ এবং অন্যান্য ধর্মস্থান সুন্দর কইর‍্যা বানাইছে, এই কথা যেমন সত্য, তেমন বাস করার ঘরটারেও সুন্দর কইর‍্যা বানাইতে ভুল করেন নাই ।এই জিনিষ আপনে অ্যানসিয়েন্ট ইন্ডিয়াতে পাইবেন না। সেক্যুলারাইজেশন ইফেক্ট অব ইসলাম অন ইন্ডিয়া ওয়াজ রিয়্যালি ইনারমাস।

খ্রিষ্টানগো শিল্প সাহিত্য সবখানে পরকালের মহিমাকীর্তণ করা অইত। যীশুখ্রীষ্ট তো এই নশ্বর দুনিয়াকে ভেল অব টিয়ার্স কইয়া গেছে। রেনাসাঁর আগে পরকালটাই আছিল সব রেনেসাঁর পরে এই দুনিয়াটাই আসল।

 হিন্দুদের মধ্যে জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস যা অখন আপনেরা দেখবার পান, এইডা প্রাচীন আর্যদের বিশ্বাস আছিল না। আর্যরা জন্মান্তরে বিশ্বাস করলে বেদে উল্লেখ থাকতো । বেদে এক্কেবারে জন্মান্তরের ছেঁটেফোটাও নাই। এইডা তারা পরে ড্রেভিয়ানদের কাছ থাইকা ইনহেরিট করছে ।

 

সমাজতন্ত্র ও রাজ্জাক :

সমাজতন্ত্র নিয়ে ছফা তারে জিগানোর পর তিনি একটা গল্প বলছিলেন । 

 

তখনকার সোভিয়াত ইউনিয়ানের একজন ঢাকায় আইসা রিকশায় চড়তে চাইতেছিল না রিকশাওয়ালা কষ্ট হইবে সেজন্য ।তিনি কইতেছেন মেহন্নতি মানুষের উপর এই যে জাগ্রত সহানুভুতি আমার মনে হইছে এইডাই সমাজতন্ত্রের সবচাইতে বড় কন্ট্রিবিউশন

 

খাওয়া দাওয়া ও শিক্ষা :

খাওয়া দাওয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যা কইছে তা কিছু সংগ্রহ কইরা রাখন যাইবো।

 

  • যে জাতি যত সিভিলাইজড তার রান্না বান্না তব বেশি সফিস্টিকেটেড ।

  •   যখন কোন নতুন জায়গায় যাইবেন দুইটা জিনিষ পয়লা জানবার চেষ্ঠা করবেন। ওই জায়গার মানুষটা কি খায় আর পড়ালেখা কি করে ?

  • বেঙ্গলের সবচাইতে মিসফরচুন ব্যাপার হইল এখানে সার্পোটিং কলেজ অওনের আগে য়্যুনিভার্সিটি তৈয়ার হইছে। আর মিডিল স্কুল তৈয়ার না কইরা কলেজ বানাইছে ।

  •  লেখক কবিরা আ বলে সেরকম আচরন না করলেও চলে । হের ল্যাইগা প্লেটো তার রিপাবলিক থ্যাইকা কবিগো নির্বাসনে পাঠাইবার কথা বলছিল ।

ছফার কথা রাজ্জাকের সুরে :

আহমদ ছফা তার কথা কইতে কইতে নিজেও কিছু কথা কইছে সেগুলাতেও বেশ কিছু সারবস্তু পাওয়া যাইবো। ছফা কইতেছেন..

 

   সৃষ্টিশীল মানুষেরা সাধারনত বিপজ্জনক ধরনের হয়ে থাকে ।বাইরে তারা যতই নিরীহ এবং অপরের প্রতি মনোযোগী হয়ে থাকুন না কেন ভেতরে তাদের স্বেচ্ছাচারী হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না । 

    যেখানে আত্নপ্রকাশের বিষয়টি অপর সকলকে ছাপিয়ে ওঠে, সেখানে ব্যক্তিকে অনিবার্যভাবে স্বেচ্ছাচারি হয়ে উঠতে হয় । সৃষ্টি ধর্মের নিয়ম ছাড়া বাহিরের কোনো নিয়ম সেখানে ক্রিয়াশীল হয়ে উঠতে পারে না।

 যে বস্তু প্রযোজনের সময় হাজারবার কামনা করিও পাইনি, সেই বিশেষ সময়টি চলে যাবার পর তার কিছু ক্ষতিপুরুন যদি আমার কাছে সেধে এসে ধরাও দেয় আমি গ্রহণ করতে পারবো না । 

তরুন বয়সে মানুষের শরীরের কোন অংশে চোট লাগলে যৌবনে সেটা অনুভব করা যায় না, অনেক সময় বুড়ো হলে ব্যাথাটা ফিরে আসে মানুষের বিশ্বাসের সংস্কার এগুলো বেশী বয়সে নতুন করে জেগে ওঠে।

  •  মানুষের মন ভারি বিদঘুটে জিনিষ কত অসম্ভব বস্তুর কল্পনা করে ।

ছফার আরো কিছু পর্যবেক্ষন  :

  •  বাঙালী মুসলমানদের বেশিরভাগেই নিম্নবর্নের হিন্দুদের বংশধর

  •  উনিশশো একুশ থেকে সাতচল্লিশ সালের মধ্যবর্তী সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন ছাত্রও আইসিএস পাশ করেনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সর্ম্পকে একথা বলার উপায় নাই

আমার কথা :

এখন শেষ কথা হইতেছে আমি এই নিয়া আবার কেরানীর কাজটুকু করবার গেলাম ক্যান ! সব তো বই এ লেখাই আছে।এই অকামটা হইল নিজের জন্য !! এর আগেও বইখানা পড়ছি কিন্তু এবার পড়োনের সময় ক্যান জানি মনে হইল, এই দুই গুরু কারে লইয়া কি কি কইছে নোট নেই তো দেখি! তাই নোট নিবার লাগলাম ! নোট তো হারায় যায় , তাই ভাবলাম সবাইরে পড়বার দেই !! পড়বার দিলে তো গোছাইয়া দিওন লাগে , নাকি ? আর বই ক্যামনে পড়তে হয় তা গুরু আব্দুর রাজ্জাকের পরামর্শটা মনে ধরছে ! রাজ্জাক সাহেব কইতেছেন…

 

আপনে যখন মনে করলেন, কোন বই পইড়্যা ফেলাইলেন, নিজেরে জিগাইবেন যে বইটা পড়ছেন, নিজের ভাষায় বইটা আবার লিখবার পারবেন কিনা ।আপনের ভাষার জোর লেখকের মতো শক্তিশালী না অইতে পারে। আপনের শব্দ ভান্ডার সামান্য অইতে পারে,তথাপি যদি মনে মনে আসল জিনিষটা রি প্রোডিউস না করবার পারেন, ধইর‍্যা নিবেন আপনের পড়া অয় নাই

 

তাই রিপ্রোডিউস করোনের জন্য লিখলাম। তুমি তাহাই দেখ যা তুমি দেখবার চাও । আজকে যে্ইটা মনে ধরতেছে কালকে সেইটা মনে নাও ধরবার পারে। আজকে যা জরুরী পরে তা অপ্রযোজনীয় !! ছফা আর রাজ্জাক সাহেবের কি কি মনে ধরলো তা একটু টুকে রাখলাম।যদি বাঁচি তা্ইলে ২০ বছর পর আবার যাচাই করা যাইবো কোনটা হুদা কথা কোনটা বেহুদা কথা কইছেন তারা !!

 

 গোপন ইচ্ছা : 

আরো একটা গোপন ইচ্ছে আছে, ইচ্ছা প্রকাশ করলে যদিও পুরুণ হইবার সম্ভাবনা কইমা যায় তবু কই !! বানবার পারলে সত্যজিৎ এর শ্যাষ দিকবার সিনেমাগুলার মত একখান মাস্টারপিস বানান যাইবো এই বইয়ের চরিত্রগুলা দিয়া!! স্বপ্ন না দেখার চাইতে দেখা ভালো, তাই দেখি !!


পারভেজ সেলিম

লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকর্ম ী


 


আরো পড়ুন :

মাইকেল মধুসূদন দত্ত : ট্রাজিডির এক মহাকাব্যিক নায়ক !

আলেকজান্ডার : মহান যোদ্ধা নাকি দূর্ধর্ষ খুনি ?


১৪২ thoughts on “যদ্যপি আমার গুরু: গুরু-শিষ্যে এক অসাধারণ বয়ান

  1. Системные перестановки. Метод семейных расстановок по Берту Хеллингеру Растановки.
    Расстановки по Хеллингеру. Системно-феноменологический подход.

    Системно-феноменологический подход.

    Системно-феноменологический подход.

  2. Thank you for sharing superb informations. Your web site is so cool. I’m impressed by the details that you’ve on this site. It reveals how nicely you understand this subject. Bookmarked this website page, will come back for more articles. You, my friend, ROCK! I found just the information I already searched everywhere and simply couldn’t come across. What a perfect website.

  3. I think everything wrote made a ton of sense. However,
    what about this? what if you added a little information? I ain’t suggesting your content isn’t good,
    but what if you added a post title that makes people desire more?
    I mean যদ্যপি আমার গুরু: গুরু-শিষ্যে এক অসাধারণ বয়ান is a little vanilla.
    You should glance at Yahoo’s front page and note
    how they create article headlines to get viewers to open the links.
    You might add a related video or a related pic or two to grab people interested about
    what you’ve got to say. In my opinion, it would bring your blog a little bit more interesting.

  4. Hello I am so happy I found your site, I really found you by
    accident, while I was browsing on Askjeeve for something else, Anyways I am here now and would just like to
    say cheers for a incredible post and a all
    round enjoyable blog (I also love the theme/design), I
    don’t have time to go through it all at the minute but
    I have saved it and also added your RSS feeds, so when I have time I will be
    back to read a great deal more, Please do keep
    up the excellent work.

  5. I don’t know if it’s just me or if perhaps everyone else experiencing problems
    with your blog. It appears as though some of the written text on your content are
    running off the screen. Can someone else please provide feedback and let me know if this is happening to
    them as well? This might be a problem with my web browser because I’ve
    had this happen before. Kudos

  6. May I simply say what a relief to discover a person that actually knows what they’re discussing over the
    internet. You definitely know how to bring
    an issue to light and make it important. A lot more people need to check this out and understand this side
    of the story. I can’t believe you are not more popular given that you definitely have the gift.

  7. Undeniably consider that which you said. Your favorite justification appeared to
    be at the net the simplest factor to keep in mind of.

    I say to you, I definitely get annoyed while
    folks consider worries that they plainly do not know about.
    You controlled to hit the nail upon the highest and
    outlined out the entire thing without having side-effects , people
    can take a signal. Will likely be again to get more.
    Thank you

  8. My developer is trying to persuade me to move to .net from PHP.
    I have always disliked the idea because of the costs.
    But he’s tryiong none the less. I’ve been using WordPress on various websites for
    about a year and am concerned about switching to another platform.

    I have heard excellent things about blogengine.net.
    Is there a way I can transfer all my wordpress posts into it?
    Any kind of help would be greatly appreciated!

  9. Hi there! I know this is kinda off topic however I’d figured I’d
    ask. Would you be interested in trading links or maybe guest writing a blog post
    or vice-versa? My blog addresses a lot of the same subjects as yours and I
    feel we could greatly benefit from each other. If you might be interested feel
    free to shoot me an email. I look forward to hearing from you!
    Terrific blog by the way!

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x