বনু কাইনুকা: মদিনা থেকে বিতাড়িত প্রথম ইহুদী গোত্র


পারভেজ সেলিম ।


ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদরে মুসলমানেরা জয় লাভ করে কুরাইশদের সাথে। মদিনা ধীরে ধীরে মুসলমানদের প্রধান শহর হয়ে উঠে। 

মদিনায় তখন বসবাস মুসলমান ও ইহুদীদের।

মুসলিম এক নারীকে অসম্মান করাকে কেন্দ্র করে  দ্বন্দ শুরু হয় বনু কাইনুকা গোত্রের এক ইহুদীর সাথে। 

দ্বন্দ শেষ পর্যন্ত হত্যাকান্ডে রুপ নেয়। একজন মুসলমান ও একজন ইহুদী নিহত হয়। 

এই নিয়ে ইহুদী মুসলমানদের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায়।  ইহুদীরা হেরে গেলে তাদেরকে মদীনা থেকে বের করে দেয়া হয়।

ঘটনার শুরু :

ঘটনার সুত্রপাত্র এক বাজারে। বনু কাইনুকা গোত্রের মানুষরা ছিল স্বর্নের কারিগর। মুসলমানরা আসার আগে থেকেই ইহুদীরা এই পেশায় জীবন নির্বাহ করতো মদিনায়।

সময়টা ৬২৪ সাল। একদিন এক মুসলিম নারীর সাথে এক ইহুদী দোকানদারের বাক বিতন্ডা শুরু হয়। মুসলমান নারীর মুখের পর্দা সরাতে বলায় তিনি রাজি হননি এই নিয়ে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। 

ইহুদী দোকানদার চেয়ারের সাথে সেই নারী কাপড়  পেরেক দিয়ে আটকিয়ে দেয়।

মহিলা উঠে যাবার সময় তার কাপড় ছিঁড়ে গিয়ে তিনি প্রায় নগ্ন হয়ে পড়েন।

মুসলমান নারীর এমন অপমান দেখে সেই দোকানদারকে সেখানেই হত্যা করেন এক পথচারি মুসলমান।

এই দেখে কাইনুকা গোত্রের অন্য ইহুদীরা সাথে সাথে সেই মুসলমানকে সেখানেই হত্যা করেন।

এই ঘটণা চরম আকার ধারণ করে পরবর্তীতে ইহুদী আর মুসলমানদের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়।

মুসলমানেরা বনু কাইনুকা গোত্রকে আক্রমণ করে। ১৫ দিন অবোরোধ থাকার পর মুসলমানদের কাছে পরাজয় বরণ করে ইহুদীরা।

মহানবী বনু কাইনুকা গোত্রের সকল ইহুদীকে বন্দি করার নির্দেশ দিলে খাজরাজ গোত্রের নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এগিয়ে আসে। মহানবীর সাথে উবাই এর বিশেষ সখ্যতা ছিল।

মহানবীকে কাইনুকা গোত্রের ইহুদীদের হত্যা না করার অনুরোধ করেন তিনি।

মহানবী শেষ পর্যন্ত কোন ধরণের শাস্তি প্রদান না করে তিন দিনের মধ্যে মদিনা ছেড়ে যাবার সুযোগ দেন কাইনুকা গোত্রের ইহুদীদের।

মদীনা সনদ অমান্য করার অভিযোগে মদিনা থেকে বিতাড়িত হওয়া প্রথম ইহুদী গোত্র বনু কাইনুকা।

মুসলমানেরা মদিনায় হিজরত করার দুবছরের মধ্যে ৬২৪ সালে প্রথম ইহুদী গোত্র হিসেবে বনু কাইনুকা মদিনা থেকে বিতাড়িত হয়।


পারভেজ সেলিম

লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকর্মী


 আরো দেখুন :

৪ thoughts on “বনু কাইনুকা: মদিনা থেকে বিতাড়িত প্রথম ইহুদী গোত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x