পারভেজ সেলিম
আড়াইশো বছর আগে বাঙলা অঞ্চলে প্রথম যে ব্রিটিশ বিরোধি আন্দোলন হয় তা ‘ফকির-সন্নাসী বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত।
তার মধ্যে ‘সন্নাস বিদ্রোহ’কে উপজীব্য করে অনন্য এক উপন্যাসের জন্ম হয়।
বাঙলার সবচেয়ে বড় দূভিক্ষ ‘ছিয়াত্ত্বরের মন্বত্তরে’র (১৭৭০) পটভূমিতে বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই অনবদ্য উপন্যাসটি লেখেন। প্রকাশ পায় ১৮৮২ সালে। লেখকের বয়স তখন ৪৪ বছর। উপন্যাসের নাম ‘আনন্দমঠ’।
‘দেশ বা রাস্ট্র’ নামক নতুন এক ভাবনার প্রকাশ ঘটান লেখক! যদিও তা একটি হিন্দু রাষ্ট্রের ধারণা।
বঙ্কিমচন্দ্রের সবেচেয়ে বিতর্কিত ও শক্তিশালী উপন্যাস এই ‘আনন্দমঠ’।
হিন্দু, মুসলমান, ইংরেজদের ক্ষমতার দ্বন্দের ভিতরে দিয়ে হিন্দু জাতীয়তাবাদের চেতনার জন্ম হতে দেখা যায় এই উপন্যাসে।
স্বভাবতই মুসলমানেরা এই লেখাকে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের মেনোফ্যাস্টো বলে মনে করেন, যা হয়ত অস্বীকার করার উপায় নাই।
উপন্যাসের বিষয় ও নির্মাণশৈলী অভিনব। নতুনত্বে স্বমহিমায় বাংলা সাহিত্যে এক উচ্চ আসনে জায়গা করে নিয়েছে ‘আনন্দমঠ’।
চার খন্ডে ৪৬ টি ছোট ছোট পরিচ্ছেদে লিখা এই উপন্যাস। প্রথম খন্ডে ১৮ টি, তৃতীয় খন্ডে ১২টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। বাকি দুটি খন্ডে ৮ টি পরিচ্ছেদ। পরিচ্ছেদ গুলো অবশ্য সুখপাঠ্য।
রবীন্দ্রনাথের আগে বাংলার গদ্যভাষা যে বঙ্কিমের হাতে পুষ্ট হয়েছে তার প্রমাণ ‘আনন্দমঠ’।
গল্প কি আছে ‘আনন্দমঠে’?
প্রথম খন্ড :
১.
সাল ১১৭৬ বাংলা। ১৭৭০ ইংরেজি। যে বছর মন্বন্তর বা বাংলার সবচেয়ে বড় দূর্ভিক্ষটি হয়।
গ্রামের নাম পদচিহ্ন। পুরো গ্রাম শ্মশান হয়ে গেছে। বঙ্কিম দূর্ভিক্ষের সময়ের বর্ননা করছেন ‘রাজপথে লোক দেখি না, সরোবরে স্নাতক দেখি না, গৃহদ্বারে মনুষ্য দেখি না, বৃক্ষে পক্ষি দেখি না, গোচারণে গোরু দেখি না, কেবল শ্মশানে শৃগাল-কুক্কুর।’
এমনি সময় দুপুর বেলা ঘরের ভিতর অন্ধকারে বসে এক দম্পতি ভাবছেন তাদের সামনে মন্বন্তর।
দম্পতির বিশেষণে একটি শব্দ ব্যবহার করেছেন লেখক সেটি হলো ‘নিশীথফুল্লকুসুমযুগলবৎ’। গল্পের শুরু এখান থেকেই।
পরে প্যারায় লেখক মন্বন্তরের কিছু কারণ বর্ননা করেছেন। ১১৭৪ এ ফসল ভালো হয় নাই। তবু রাজা রাজস্ব কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে নিলো।
১১৭৫ বর্ষাকালে বেশ বৃষ্টি হলো কিন্তু আশিন কার্তিকে বিন্দুমাত্র বৃষ্টি পড়লো না। ফসল শুকিয়ে গেলো।
যেটুক ফসল হলো সেটাও রাজপুরুষেরা তাদের সিপাহীর জন্য কিনিয়া রাখলো। লোকে আর খাইতে পারলো না।
এরপর গল্পের চরিত্রের সাথে প্রথম দেখা হয় পাঠকের। দম্পতির নাম মহেন্দ্র সিংহ ও কল্যাণী। তাদের এক শিশু কণ্যা আছে সুকুমারি। পরিবারের অন্য সদস্যরা মন্বন্তরে কেউ মারা গেছেন, কেউ পালাইছেন।
তাহারাও এই গ্রামে আর টিকতে পারবে না জেনে মুর্শিদাবাদ, কাশিমবাজার বা কলকাতাতে গেলে প্রাণ রক্ষা হইবে ভেবে গ্রাম থেকে শহরে যাবার পরিকল্পনা করে।
মহেন্দ্র গ্রামের ধনী মানুষ। সেই ধন আজ আর কাজে আসছে না।
খাদ্যের অভাবে গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে পা বাড়ায় তিনজন। সাথে মহেন্দ্র নেয় বন্দুক ও আর কল্যাণী নেয় বিষের কৌটা। রাস্তায় ডাকাতের কাছ থেকে নিজেকে বাঁচাতে তার শেষ অস্ত্র।
জৈষ্ঠ্য মাসের কড়া রোদ্দেরে তিনজনে পথ চলতে লাগলো। অনেক কষ্টে সন্ধ্যার আগে এক অজানা স্থানে পৌঁছালো তারা। সেখানেও ঘরদোর ফেলে রেখে সবাই কোথায় যেন চলে গেছে। স্ত্রী কণ্যাকে একটা ঘরে রেখে,খাবারের সন্ধানে বাহিরে গেল মাহেন্দ্র।
গল্পের প্রথম পরিচ্ছেদ এখানেই শেষ হয় ।
২.
কল্যাণী ও সুকুমারিকে শীর্ণ, অতিশয় কৃষ্ণবর্ণ, উলঙ্গ মানুষের মতো, প্রেতবৎ মুর্তিরা এসে তুলিয়া নিয়ে গেল। মাহেন্দ্র কলসি করিয়া দুধ জোগাড় করে ফিরে আসার পরে ঘরে আর কাউকে খুঁজিয়া পেল না।
৩.
দস্যুরা স্ত্রী কন্যাকে তুলে এনে এক বনের ভিতর নামাইলো। গহনা অলংকার আগেই লুট করেছে তারা। কিন্তু এই গহনা দিয়ে কি করবে তারা? তাদের ক্ষুধা নিবারণ করিবে কি করে? এই তর্কবিবাদে শেষ পর্যন্ত তাদের দলপতি নিহত হইল।
ক্ষুধায় জর্জরিত দস্যুরা নিহত দলপতিকে পুড়িয়া নরমাংস খাবার বন্দোবস্ত করতে লাগলো।
এমন সময় সবাই বলে উঠল, নরমাংস যদি খাবে তখন বৃদ্ধ দলপতির মাংস খাবে কেন? আজকে যে কণ্যাটি উঠায়ে এনেছে তার কচি মাংস খাবে!
খুঁজতে গিয়ে দেখে, কল্যানী ও কণ্যা সুকুমারি সেখানে থেকে পালিয়ে গেছে।
৪.
বনের মধ্যে গভীর রাতে কণ্যা সহ হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে জ্ঞান হারায় কল্যাণী।
৫.
বনের ভিতর একটা মঠ আছে। আগে যা ছিল বৌদ্ধদের পরে যা হিন্দুদের হয়েছে। কল্যাণীকে অজ্ঞান অবস্থায় এক ব্রক্ষ্মচারি সেখানে তুলে আনেন। সেবা করে সুস্থ করেন। কিন্তু কোন কিছু মুখে তোলেন না কল্যানী। স্বামীর খোঁজ না পাওয়ার শোকে। ব্রক্ষ্মচারি মহেন্দ্রকে খুঁজতে বের হয়ে গেলেন।
৬.
ব্রক্ষ্মচারি অনেক রাতে কলকাতা -মুরশিদাবাদ যাবার যে রাস্তা তার পাশের জঙ্গলের ভিতর প্রবেশ করলেন। সেখানে দুইশজন মানুষ চুপ করে বসে আছেন।
ব্রক্ষ্মচারি ভবানন্দকে খুঁজে বের করে মহেন্দ্রর খবর নিলেন। মানে তারা সকলে জানেন পুরো বিষয়টা। স্ত্রী সন্তানের কাছে মহেন্দ্রকে পাঠানো ব্যবস্থা করতে বলে তিনি প্রস্থান করলেন।
৭.
চটিতে স্ত্রী কণ্যাকে না পেয়ে শহরের দিকে যেতে শুরু করেন মহেন্দ্র।
পলাশী যুদ্ধের পরপরই বাংলা ইংরেজদের হয়ে যায়নি। বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর তখন বাঙলা শাসন করেন।
সময়টা লেখক বর্ণনা করেছেন, তখন টাকা নেবার ভার ইংরেজের, আর প্রাণ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের ভার পাপিষ্ঠ নরাধম বিশ্বাসহন্তা মনুষ্যকুলকলঙ্ক মীরজাফরের উপর।
মীরজাফর সম্পর্কে লেখক বলছেন, মীরজাফর আত্নরক্ষায় অক্ষম, বাংলা রক্ষা করিবে কি প্রকারে? মীরজাফর গুলি খায় ও ঘুমায়। ইংরেজ টাকা আদায় করে ও ডেসপাচ লেখে। বাঙ্গালী কাঁদে আর উৎসন্নে যায়।
হারানো বউ বাচ্চা খুঁজতে রাস্তায় তখন মহেন্দ্র। খাজনা আদায়কারি সিপাহীদের একটা দলের সাথে দেখা হয় তার। মহেন্দ্রকে ডাকাত ভেবে মারামারি শুরু করে তারা। পরে মাহেন্দ্রকে গাড়ি বহরের সাথে বেঁধে নিয়ে যায় সিপাহীরা।
৮.
খুঁজতে খুঁজতে রাস্তায় সিপাহীদের সাথে দেখা হয় ভবানন্দের।
ভবানন্দ মাহেন্দ্রর বাধা হাত মুক্ত করে দেয়।
সিপাহীদের সাথে মারামারি গুলাগুলি হইলো। একজন হাওলদার গুলি খেয়ে মারা গেল। সিপাহীদের হটিয়ে দিয়ে লুট করে নিলো।
জীবানন্দের নেতৃত্বে সব কিছু হচ্ছিল। দেখা হয়ে গেল গুরুত্বপূর্ন দুই চরিত্র জীবনান্দ ও ভবানন্দের। লুটের মাল যথাস্থানে পাঠিয়ে দেবার কথা বলে জীবানন্দ চলে গেল। একা ভবানন্দ দাঁড়িয়ে থাকলো।
৯.
ভবানন্দ নিজের পরিচয় প্রকাশ না করিয়া মহেন্দ্রর স্ত্রী কন্যার সন্ধান দিলো। মহেন্দ্র মনে মনে ভাবিতে লাগিল এরা আবার কেমন দস্যু! যারা অন্যের উপকার করে।
১০.
মহেন্দ্র বুজল এই দস্যুরা দস্যু নয় অন্যকিছু। মুসলমান রাজাকে নিয়ে তাদের মুল সমস্যা। ভারতের আর কোন দেশে এমন সংকট নাই শুধু এখানেই। তাই তারা মুসলমান রাজা তাড়াইতে চায় এই দেশ হইতে।
‘ধর্ম গেল, জাতি গেল, মান গেল, কুল গেল, এখন তো প্রাণ পর্যন্ত যায়। এ নেশাখোর নেড়েদের না তাড়াইলে আর কি হিন্দুর হিন্দুয়ানি থাকে?
তাই ‘তারা সকলে দেশমাতার সন্তান’ হিসেবে গুরু দায়িত্ব পালন করছে। সন্তান হবার শর্ত হলো, স্ত্রী কন্যার মুখ দেখা নিষেধ। ব্রতের সফলতা না পাওয়া পর্যন্ত শর্ত ভঙ্গ করা যাবে না।
মহেন্দ্র এই ব্রত গ্রহণ করিবে না বলে মনস্থির করিল।
১১.
‘আনন্দমঠ’ নামটি পাওয়া গেল ১১ তম পরিচ্ছদে এসে।
সত্যানন্দ ঠাকুর সকল সন্তানদের প্রধান। ভবানন্দ ও জীবানন্দ, মহেদ্রকে সাথে নিয়ে প্রবেশ করলেন মঠে।
ব্রক্ষ্মচারি সত্যানন্দ গোটা মন্দির ঘুরিয়া দেখাইলো আর সব জানাইতে লাগলো। মন্দিরে গোপন কক্ষে ঘুরতে ঘুরতে মহেন্দ্র তার সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল। সে এই ব্রত গ্রহণ করিবে। একবার স্ত্রী কণ্যার মুখ দেখে সে মায়ের সন্তান হবার ব্রত গ্রহণ করিবে।
মন্দিরের বাহিরে স্ত্রী কন্যার কাছে মহেন্দ্র চলে গেল।
সত্যানন্দ সুড়ংঙ্গ দিয়ে ভিতরে গিয়ে জীবনান্দ ও ভবানন্দকে জানাইলো মহেন্দ্রর দিকে নজর রাখতে, তার যেন কোন ক্ষতি না হয়। সে অবশ্যই ব্রত গ্রহণ করিতে আসিবে বলেই মত দিলেন সত্যানন্দ।
১২.
অনেক দুঃখের পর কল্যাণী ও মহেন্দ্রর সাক্ষাত হইলো। কান্নাকাটি খাওয়া ঘুম শেষে সিদ্ধান্ত নিলো তারা পদচিহ্ন গ্রামে ফিরে যাবে। কল্যাণী ও কন্যাকে একজন অভিভাবকের হাতে তুলে দিয়ে মহেন্দ্র দেশমাতৃকার সন্তান হইবার ব্রত গ্রহণ করবে।
এত গভীর জঙ্গল হতে বের হবার রাস্তা পাচ্ছিল না। পথে এক বৈষ্ণবের সাথে দেখা। নাম ধীরানন্দ গোস্বামী।
তার দেখানো পথ ধরে জঙ্গল থেকে বের হয় এক নদী আর বৃক্ষের নিচে তিনজনে বসিল।
কি করবে তার বিস্তর আলাপ হয় এখানে। মহেন্দ্র তাদের হারাইয়া কি করেছে তা বিস্তারিত আলাপ হয়। কল্যাণী তার সে সময়ের গল্প না বলে, গত রাতে যে স্বপ্ন দেখেছে তা বলতে থাকে।
স্বপ্নে দেবতারা তাকে বলেছে মহেন্দ্রকে ছেড়ে দিতে, নইলে সে মায়ের সেবা করতে পারবে না।
আলাপ করতে করতে কণ্যা সুকুমারি বোতলের ভিতরে থাকা বিষ মুখে দেয়। কণ্যা মারা গেছে ভেবে কল্যানীও বিষ খেয়ে ফেলে। মহেন্দ্র তখন কি হইলো? কেন হইলো? করে কাঁদিতে থাকে।
সমস্ত কিছু অন্ধকার হয়ে আসে। মহেন্দ্রকে কোলে তুলে নেয় সত্যানন্দ।
‘যেখানে অধিক ভালোবাসা, সেখানে ভয়ই অধিক প্রবল।’
১৩.
রাজ্য সরকারের খাজনা সন্নাসীরা লুট করেছে, এ খবরে সিপাহী বরকন্দজরা সন্নাসী ধরতে বেরিয়ে পড়ে।
রাস্তায় সত্যানন্দ ও মহেন্দ্রকে সন্নাসী ভেবে ধরে নিয়ে যায়। কল্যানীর নিথরদেহ ও কণ্যা সুকুমারি সেখানেই পড়ে রইল।
১৪.
কারাগারে সত্যানন্দ ও মাহেন্দ্র। দুজনের কথোপকথন চলে।
ধীরানন্দ গোসাই কারাগার পাহাদারকে ধুতুরা মিশানো সিদ্ধি খাইয়ে অজ্ঞান করে তাদের মুক্ত করে।
মহেন্দ্র মুক্ত হয়েও সত্যানন্দকে ছাড়া যেতে রাজি হলো না। সত্যানন্দ বললেন অন্য উপায়ে আজ তারা কারাগার থেকে মুক্ত হবেন।
১৫.
জীবনান্দ নদীর ধার দিয়ে চলতে চলতে মহেন্দ্রর স্ত্রী কণ্যার দেখা পাইল। স্ত্রী মৃত, কন্যা জীবিত।
স্ত্রীলোকের সৎকার ভবানন্দ করবে এই আশায় জীবা বালিকাকে নিয়ে নিবিড় জঙ্গলের ভিতর প্রবেশ করলো।
জঙ্গল পার হয়ে এক ক্ষুদ্র গ্রামে প্রবেশ করিলো। গ্রামের নাম ভৈরবীপুর। লোকে বলত ভরুইপুর।
এক বড় আমবাগানের ভিতর ছোট একটা বাড়ি।
সেখানে নিমি নামের ছোট বোনের বাড়িতে মহেন্দ্রে কন্যাকে রেখে আসে।
আসার সময় নিমির জোরাজুরিতে জীবানন্দ দেখা করতে রাজি হলো এক নারীর সাথে। নিমাই নারীকে নিয়ে এসে ভিতরে প্রবেশ করাইয়া দরজা বন্ধ করে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকিলো।
১৬.
সে স্ত্রী লোকের বয়স ২৫ বছর। জীবানন্দের স্ত্রী, নাম শান্তি। দেশ ধর্ম কাল, ব্রত অনেক কিছু নিয়ে কথা হলো। জীবানন্দের আর মঠে ফেরত যেত মন চাচ্ছে না। শান্তি অনেক বুঝিয়ে তাকে ব্রত পালন করার তাগিদ দিলো।
শান্তিকে পৈতিক ভিটায় গিয়ে বসবাসের অনুরোধ করে জীবা বেরিয়ে পড়লো।
১৭.
ভবানন্দ মঠের ভিতর বসে হরি গুনগান করিতেছিল। এক তেজস্বী সন্তান সত্যান্দকে মুসলমানেরা ধরে নিয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করলো।
ভবানন্দ তা উড়াইযা দিল। কারণ ধীরানন্দ তার পিছন পিছন ছিলো।
তারপরও ভবানন্দ নগরের দিকে যাবার মনস্থির করলো। ঘোড়াশাল হতে একি ঘোড়া নিয়ে নগরের দিকে যেতে লাগলো।
পথে কল্যানীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পেল।
বনের মধ্যে থেকে কিছু পাতা এনে রস করে খাওয়াইলো। অনেকক্ষন চিকিৎসা সেবা করার পর কল্যাণী চোখ খুলল।
ভবানন্দ ঘোড়ার পিঠে কল্যানীর অর্ধজীবিত দেহ নিয়ে নগরের দিকে ছুটিল।
১৮.
সন্ধ্যা না হইতেই সন্তানসম্প্রদায় জানতে পারলো সত্যানন্দ ব্রক্ষ্মচারি ও মহেন্দ্র নগরের কারাগারে বন্দি। তখন একে একে একশ দুইশ করে দুহাজার সন্তান মঠে এসে উপস্থিত হইলো।
জ্ঞানানন্দ তরবারি হাতে উচ্চস্বরে বলিত লাগিলো, ‘এই বাহুতে কি বল নাই, হৃদয়ে কি সাহস নাই,। চলো আমরা সেই যবনপুরি ভাঙ্গিয়া ধুলিগুড়ি করি। সেই শূকরনিবাস অগ্নিসংস্কৃত করিয়া নদীর জলে ফেলিয়া দেই।’
সেই অন্ধকার রাতে তুমুল রবে হরিবোল করতে করতে নগরে প্রবেশ করলো সন্তানেরা। কারাগার ভাঙ্গিয়া রক্ষীগনকে মারিয়া ফেলিলো।
সত্যানন্দ ও মহেন্দকে মুক্ত করে মাথায় তুলে নাচতে লাগলো।
এরপর তাহারা যেখানে মুসলমানের ঘর দেখিলো সেখানেই আগুন লাগায় দিলো। সত্যানন্দ বলে, ফিরে চলো অনর্থক অনিষ্ট সাধনে প্রয়োজন নাই।
এ খবর পেয়ে দেশের কতৃপক্ষ পরগনা সিপাহি সিপাহীদের সাথে যুদ্ধ করতে চাইলো সন্তানেরা। কিন্তু বিশ পচিশটা বন্দুক কামানের কাছে তারা কি করবে?
সন্তানগন পরাজিত হইয়া পালাইয়া গেল। প্রথম খন্ড এভাবে সমাপ্ত হইলো।
(চলবে..)
পারভেজ সেলিম
লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকর্মী
Your blog is a great source of information.
kurdish porn
Its like you read my mind You appear to know a lot about this like you wrote the book in it or something I think that you could do with some pics to drive the message home a little bit but instead of that this is fantastic blog An excellent read I will certainly be back
먹튀 없는 안전한 메이저 사이트 추천 / 토토 사이트 카지노 사이트 먹튀 검증으로 먹튀 방지 / 먹튀 사이트 정보 제공 / 먹튀 신고 / 토토 커뮤니티 / 카지노 커뮤니티 / 먹튀검증 커뮤니티
Somebody essentially help to make significantly articles Id state This is the first time I frequented your web page and up to now I surprised with the research you made to make this actual post incredible Fantastic job