পারভেজ সেলিম
১৮৮২ সাল। রবীন্দ্রনাথ ফিরেছেন বিলেত থেকে। দেড় বছর আগে রবী যে ছোট বৌঠানকে ছেড়ে গিয়েছিলেন বিদেশ সেই বৌঠান আর এখনকার বৌঠান যেন এক নয়। এ যেন নতুুন এক মানুুষের সাথে দেখা হলো কবির।
এটাই রবীর জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেমের সাথে পরিচয়। অনুভূতি ভাগাভাগি করা জীবনের প্রথম বন্ধু। যাকে রবি বলতেন ‘জীবনের ধ্রুবতারা’ যা সবসময় জ্বলে।
বিলেত থেকে জোড়াসাঁকোর বাড়িতে ফিরেছেন রবীন্দ্রনাথ। দেড় বছর ধরে তার অপেক্ষায় আছে তার নতুন বৌঠান। যার নাম কাদম্বরি দেবী।
কাদম্বরী যখন এই বাড়িতে আসেন তখন তার বয়স নয় বছর আর রবীন্দ্রনাথের সাত। দুজনে হয়ে উঠেছিলেন দুজনের খেলার সাথী।
পতী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ তার থেকে দশ বছরের বড়। স্বামীর সাথে কাদম্বরীর যেন সম্ভ্রম এবং শ্রদ্ধার সম্পর্ক।
ছেলেবেলার খেলার সাথী ছিলেন দুজন। দুজনে প্রায় সমান বয়সী। নতুন বউ এর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ দেবর রবীন্দ্রনাথ। ঠাকুর পরিবারে রবীই হয়ে ওঠেছিলেন সুখ দুখের সঙ্গী।

এরপর রবীর বিলেত যাত্রা। হঠাৎ যেন এক বিরহ যন্ত্রণা শুরু।
দেড় বছর পর বিলেত থেকে ফিরে নতুন এক বৌঠানের সাথে দেখা হয়ে গেল রবীর।
এই সময়টুকুতে যত অনুভূতি, বেদনা আর ভালোবাসার আদান প্রদান হয়েছে, পরবর্তী জীবনে আর কারো সাথে এমন অনুভূতির তীব্র প্রকাশ হয়নি কবির। অন্তত তার সৃষ্টির দিকে তাকালে তাই দেখা যায়।
দুজনের মান অভিমান আর ভালোবাসা ছিল চূড়ান্ত। রবীন্দ্রনাথের জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেমের নাম কাদম্বরী দেবী।
কারো কারো মতে কাদম্বরীই রবীন্দ্রনাথের প্রথম ও শেষ নারী যার মায়াবী আচ্ছন্নতা থেকে সারাজীবনই বেরিয়ে আসতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ ।

কবি লিখছেন..
‘দোসর আমার দোসর ওগো, কোথা থেকে
কোন শিশুকাল হতে আমায় গেলে ডেকে।
তাই তো আমি চিরজীবন একলা থাকি-
সকল বাধন টুটলো আমার একটি কেবল রইলো বাকি-
সেই তো তোমার ডাকার বাধন অলস ডোরে
দিনে দিনে বাধল মোরে ।…
বিলেত থেকে যখন ফেরে রবী তখন একুশ আর কাদম্বরী তেইশ।
রবী বুঝতে পারলেন তার বৌঠান এখন আরো বেশি নি:সঙ্গ। সেই নি:সঙ্গ মনের গভীরে প্রবেশের অধিকার যেন স্বামী জোতিরিন্দ্রনাথেরও নাই। কাদম্বরীর মনে সন্দেহ রইলো না রবিই তার মনের মানুষ।
রবীন্দ্রনাথের ‘নষ্ট নীড়’ ছোট গল্পের চারুলতা যেন কাদম্বরী’র-ই প্রতিচ্ছবি।

রবী সবচেয়ে বেশি বই উৎসর্গ করেছিলেন কাদম্বরীকেই।
ভগ্নহৃদয় কবিতায় তিনি লিখছেন …
‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা
এ সমুদ্রে আর কভু হবো নাকো পথ হারা’
তাদের এই সম্পর্ক স্বামী জোতিন্দ্রনাথ কিভাবে দেখতেন? এর উত্তর রবীন্দ্রনাথ নিজেই দিয়েছেন।
‘আমি যে তোমায় জানি সে তো কেউ জানেনা
তুমি মোর পানে চাও সে তো কেউ মানে না
মোর মুখে পেলে তোমার আভাস
কতজনে করে পরিহাস
পাছে সে না পারে সহিতে
নানা ছলে তাই ডাকি যে তোমায়
কেহ কিছু নারে কহিতে।
১৮৮৩ সালে ৯ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয় বাংলাদেশের মেয়ে মৃনালীনি দেবীর সাথে।
রবীর বিবাহের পরই যেন খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছিল দুজনের সম্পর্ক। কাদম্বরী শুনতে পাচ্ছিলেন ‘হেতা হতে যাও পুরাতন হেথা নতুনের খেলা শুরু হইয়াছে…” এমন বানীর প্রতিধ্বনি ।
বিয়ের সাড়ে চার মাস পর একদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে আফিম খেয়ে আত্নহত্যা করেন কাদম্বরি দেবী।
রবীকে হারানো অভিমান থেকে এই আত্নহত্যা বলেই ধরে নেন অনেকে।
রবীর জীবনে নতুন কারো আগমনকে হয়ত সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেননি বৌঠান। তাই একা একা প্রস্থান করেছেন চিরজীবনের জন্য।
ঠাকুর পরিবারের মান সম্মান যাতে কোনভাবেই নষ্ট না হয় সেজন্য কোন পুলিশ কেস পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি কাদম্বরীর মৃত্যুর পর।
অকাতরে চলে যায় একটি জীবন, যখন রবীর জীবনে আসে নতুন নারী। একমাত্র বউ। মৃনালিনী দেবী।
চলে গেছে ‘পুরাতন’ কাদম্বরী, এসেছে ‘নতুন’ মৃনালিনী।
পারভেজ সেলিম
লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকর্মী
çankaya veteriner hizmeti arıyorsanız hemen arayın. evcil dostunuza gereken yardımda bulunalım.v
Yangın kapıları, yangınların yangın kapısı tamiri bir tehlike yarattığı yerlerde önemli bir güvenlik önlemidir. Ancak bu kapılar zamanla hasar görebilir veya işlevini kaybedebilir. Yangın kapısı tamiri, kapıların tekrar güvenli
kediler kaç ayda doğurur sorusunun cevabı için hemen ziyaret edin. tıkla hemen öğren. we love google baby