ইয়াজিদের মৃত্যু পবরর্তী দ্বন্দ্ব ও সংঘাত !

পারভেজ সেলিম

পারভেজ সেলিম ।

চৌত্রিশ বছর বয়সে পিতার কাছ থেকে মুসলিম উম্মাহ ক্ষমতা পান ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া। তিন বছর ছয় মাস চৌদ্দ দিন ক্ষমতায় থাকেন উমাইয়া বংশের এই তৃতীয় শাসক। ৬৮৩ সালের ১১ নভেম্বর ৩৮ বছর বয়সে এক বিরল রোগে মৃত্যু হয় ইসলামের বিতর্কিত এই  ব্যক্তির। 

কারবালা হত্যাকান্ডের পর মুসলিম উম্মাহর মধ্যে যে অস্থিরতা আর ফিতনা তৈরি হয়েছিল ইয়াজিদের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে তার পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন কিন্তু বাস্তবে ঘটতে থাকে তার উল্টো। ইয়াজিদের মৃত্যুর পরের দশ বছর একের পর এক বিদ্রোহ, পাল্টা বিদ্রোহে রক্তাত্ব হতে থাকে মক্কা-মদিনা, কুফা আর দামেস্ক। ইসলামের আকাশ কলঙ্কিত হতে থাকে কালো মেঘে।

এ সময় ক্ষমতার কেন্দ্র ঘুরছিল মক্কা, দামেস্ক আর কুফা এই তিনটি শহরকে কেন্দ্র করে।

মুলত পাঁচ জন ব্যক্তির কাছে সেসময় ক্ষমতার পালাবদল হতে থাকে।এরা হলেন ইয়াজিদের বড় ছেলে দ্বিতীয় মুয়াবিয়া, মারওয়ান ইবনে হাকাম যিনি ছিলেন প্রথম মুয়াবিয়ার চাচাতো ভাই, এছাড়া মারওয়ানের ছেলে আব্দুল মালিক ও কারাবালা হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ গ্রহণকারি মুখতার আল সাকাফি এবং আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের যিনি ছিলেন সেসময়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের খলিফা। 

দামেস্ক যখন মারওয়ানের দখলে :

ইয়াজিদের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সুত্রে ক্ষমতা চলে যায় তার বড় ছেলে মুয়াবিয়া-২ এর কাছে। তখন তার বয়স মাত্র ২১ বছর। মাত্র ৭ মাসের মাথায় তিনি নিজেই ক্ষমতা ত্যাগ করেন। আল্লার ইবাদতে মনোযোগ দিতে মসজিদে সময় কাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।

ক্ষমতা ত্যাগের পিছনে তিনি যে যুক্তি দিয়েছিলেন তা উমাইয়া বংশের অপমানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইমাম হাসানের কাছ থেকে তার দাদা মুয়াবিয়ার জোর করে ক্ষমতা গ্রহণকে সঠিক মনে করেননি তিনি এছাড়া বাবা ইয়াজিদের সময়ের কারবালার হত্যাকান্ডের দায় নিতে চান নি। ক্ষমতা তখন তার কাছে বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল। এমন দ্বন্দ্ব ফ্যাসাদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি এবং আল্লার ইবাদতে মনোনিবেশ করেন। 

ক্ষমতা ছাড়ার চল্লিশ দিনের মধ্যেই মৃত্যু বরণ করেন ইবনে ইয়াজিদ। কারো কারো মতে তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছিল উমাইয়া বংশেরই ক্ষমতালোভিরা। সময়টা ৬৮৪ সালের জানুয়ারি মাস।

এরপর উত্তরাধিকার সুত্রে ক্ষমতা চলে যায় ইয়াজিদের নাবালক সন্তান খালিদ ইবনে ইয়াজিদের কাছে। যেহেতু খালিদ তখনও নাবালক তাই সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতা দেখভালের দ্বায়িত্ব দেয়া উমাইয়া বংশের প্রভাবশালী  ব্যক্তি মারওয়ান ইবনে হাকামের উপর।  যিনি ছিলেন তৃতীয় খলিফা উসমানের ভাতিজা ও প্রথম মুয়াবিয়ার চাচাতো ভাই। উমাইয়া খিলাফতের প্রধান তিন ব্যক্তির তৃতীয়জন হলেন এই মারওয়ান।

হঠাৎ পাওয়া সেই ক্ষমতার  অপব্যবহার শুরু করেন মারওয়ান। খালিদ ইবনে ইয়াজিদকে বঞ্চিত করে তার ছেলে আব্দুল মালেককে উত্তারাধিকার মনোনিত করেন। এই নিয়ে উমাইয়াদের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ। উমাইয়া খেলাফত সুফিয়ানিদ বংশ থেকে মারওয়ানিদ বংশের হাতে চলে যায়।

ইয়াজিদের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেছিলেন মারওয়ান। খালিদ ইবনে ইয়াজিদকে বঞ্চিত করে ছেলে আব্দুল মালেককে উত্তরাধিকার মনোনিত করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন খালিদের মা মানে মারওয়ানের স্ত্রী। ঘুমন্ত অবস্থায় মারওয়ানকে তিনি বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

৬৮৫ সালের মে মাসে মাত্র ৯ মাস ১৮ দিনের ক্ষমতা শেষ হয় মারওযান ইবনে হাকামের। এরপর দামেস্কের ক্ষমতায় বসেন তার ছেলে আব্দুল মালেক।

ক্ষমতার এমন পালাবদলে দামেস্ক ছেড়ে মিশর চলে যান খালিদ ইবনে ইয়াজিদ এবং শিক্ষাদীক্ষায় মন দেন। প্রচুর বই পড়তেন তিন, বই সংগ্রহ করা তার নেশায় পরিনত হয়েছিল পরবর্তীতে তিন একজন নামকরা রসায়নবিদ হয়েছিলেন। চল্লিশ বছর বয়সে মারা যান খালিদ ইবনে ইয়াজিদ।

মক্কায় আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের খিলাফত :

ইয়াজিদের মৃত্যুর পর বেশিরভাগ মুসলমান উমাইয়াদের পক্ষ ত্যাগ করেন। সেসময় মুসলমান শাসিত ৮টি প্রদেশের একটি মাত্র উমাইয়াদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আর সেটি হল দামেস্ক। 

মক্কা তখন আব্দুলাহ ইবনে জুবায়েরের অধীনে। মুসলমানেরা এবার তাকে প্রকাশ্যে খলিফা নির্বাচিত করে বায়য়াত গ্রহণ করতে থাকেন। কুফা, মিশর, বসরা, ইয়েমেন, আলজেরিয়া, খোরাসানের গভর্নরেরা উমাইয়াদের পক্ষ ত্যাগ করে ইবনে জুবায়ের পক্ষ গ্রহণ করেন। দামেস্ক ছাড়া পুরো মুসলিম উম্মাহ প্রধান হন আবদুল্লাহ ইবনে জুবাযের।

জানা যায় মৃত্যুর আগে দামেস্কের জনগনের পক্ষে বায়াত গ্রহণের শপথ নিয়েছিলেন দ্বিতীয় মুয়াবিয়াও। দামেস্ক থেকে সেসময় মারওয়ানও বায়াত গ্রহণের জন্য মক্কায় আসছিলেন। কিন্তু পথে কুফার কুখ্যাত গভর্নর কারবালা হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব উবায়েদুল্লাহ ইবনে জিয়াদের সাথে দেখা হওয়া সবকিছু উল্টে যায়।

ইবনে জিয়াদ মারওয়ানকেই খলিফা হবার জন্য প্রলুব্ধ করতে থাকেন। কারন আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের যদি খলিফা নির্বাচিত হন তাহলে কারবালা হত্যাকান্ডের বিচার শুরু করবেন বলে তিনি ভীত ছিলেন। তাই তিনি চান না ইবনে জুবায়ের খলিফা হোক। তিনি মারওয়ানকে খলিফা হতে প্ররোচিত করতে থাকেন।

ক্ষমতার এমন প্রলোভনে মারওয়ানের মনও পরিবর্তন হয়ে যায়। তিনি দামেস্কে ফিরে গিয়ে নিজেই খলিফা হয়ে যান। ইসলামের গতিপথ আবারো ঘুরে যায় ভিন্নদিকে।

আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকরের নাতি। বড় মেয়ে আসমা ও সাহাবী জুবায়ের ইবনুল আওয়ামের প্রথম সন্তান। মহানবীর স্ত্রী আয়শার ভীষণ প্রিয় ছিলেন ভাগ্নে ইবনে জুবায়ের।  

কারবালার হত্যকান্ডের পর ইয়াজিদের বিরুদ্ধে যারা সবেচেয়ে বেশি সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন ইবনে জুবায়ের ছিলেন তাদের মধ্যে প্রধানতম ব্যক্তি। ইয়াজিদ নানা রকম প্রলোভন দেখিয়েও যখন জুবায়েরকে বশে আনতে পারেননি তখন মক্কা আক্রমণ করেছিলেন। ৬৮৩ সালের অক্টোবরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল কাবা ঘরে। তার কয়েকদিনের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল ইয়াজিদের। ইয়াজিদের মৃত্যুর পর মুসলমানদের আশা ভরসার একমাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে জুয়ায়ের। 

কুফায় মুখতার আল সাকাফির প্রতিশোধের বিদ্রোহ:

৬৮৫ সালের ১৮ অক্টোবর কুফার ক্ষমতা দখল করেন মুখতার আল সাকাফি। কারবালায় ইমাম হোসেনসহ অন্যান্য শহীদদের হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন তিনি। 

ক্ষমতায় বসার এক বছরের মধ্যে কুফার গর্ভনর উরায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ, ইমাম হোসেনের গলায় ছুরি চালানো শিমারসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেন। 

কাকতালীয়ভাবে কারবালা হত্যাকান্ডের ঠিক ৬ বছর পর কারবালার প্রান্তরেই নিহত হন ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ। দিনটি ছিল ১০ই মহররম, ১০ ই অক্টোবর ৬৮৬। 

এরপর মুখতার আলীয় খেলাফত নামে নুতুন এক খেলাফতের ঘোষণা দেন। ইমাম হোসেনের সৎ ভাই, খলিফা আলীর আরেক পুত্র মোহাম্মদ ইবনে আল হানাফিয়াকে ইমাম মাহাদী ঘোষণা করেন মুখতার। এই নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়।

ইয়াজিদের মৃত্যুর পর মুখতারের সাথে ইবনে জুবায়েরের যে সখ্যতা তৈরি হয়েছিল, ধীরে ধীরে তা কমতে শুরু করে।

সাকাফির প্রতি বিশ্বাস হারতে শুরু করে ইবনে জুবায়ের। শেষে মুখতারকে নিয়ন্ত্রণ করতে তার ভাই মাসহাবকে কুফায় প্রেরণ করতে বাধ্য হন জুবায়ের। 

৬৮৭ সালের ৩রা এপ্রিল ১৯ জন সঙ্গী সহ মাসহাবের বাহিনীর নিকট প্রাণ হারান মুখতার আল সাকাফি। মাত্র ১৮ মাস ক্ষমতায় ছিলেন কুফার এই বিপ্লবী নেতা।

সাকাফির কারবালা হত্যাকান্ডের প্রতিশোধের ধারণা সুদুর প্রসারি প্রভাব ফেলে মুসলমানদের মনে। বিশেষ করে শিয়াদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি হয়ে ওঠেন মুখতার আল সাকাফি। তাকে নিয়ে অন্য আরেকটি পর্বে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।

উমাইয়াদের বিজয় ও নৃশংসতা :

৬৮৪ সালে মারওয়ানের মৃত্যুর পর পুত্র আব্দুল মালেক দামেস্কের ক্ষমতা খুব শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন। ধীরে ধীরে অন্য প্রদেশ গুলো দখল করতে থাকে মালেক। ৬৯১ সালে কুফাও দখলে চলে যায় আব্দুল মালেকের। মক্কা ছাড়া বাকি প্রদেশ উমাইয়ারা পুর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন।

কুফা দখলের পর আবারো মক্কা অবোরোধ করে উমাইয়ারা। দুর থেকে গোলার আঘাতে যুবায়েরর পক্ষের অনেক মুসলমান নিহত হয় । দীর্ঘ অবরোধে বাকিরাও ধীরে ধীরে যুবায়েরের পক্ষ ত্যাগ করতে তাকে। মক্কায় ইবনে যুবায়ের একা হয়ে পড়েন। সাহস আর বীরত্বের সাক্ষী হতে একা পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন মা আসমা; খলিফা আবু বকরের বড় কন্যা।

এমন পরিস্থিতি ইবনে জুবায়ের দ্বিধাহীন মন নিয়ে মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। মায়ের মতামত জানতে চান। মা নির্ভয়ে নি:সকোচে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, ‘আল্লাহর শপথ তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করো। উমাইয়াদের কাছে আত্নসমর্পণের চেয়ে ইসলামের জন্য শহীদ হওয়া কি শ্রেষ্ঠ নয়’!

মায়ের এমন মতে খুশি হন ইবনে জুবায়ের। মাযের কপালে চুমু খেয়ে, মুসলমানেরা যে আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে নত স্বীকার করেন না তা আবারো প্রমাণে বেরিয়ে পড়েন। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও একাই উমাইয়ার বিশাল বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু করেন তিনি। 

৬৯২ সালের নভেম্বরে মক্কায় শহীদ হন আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের। সন্তান হারানোর বেদনা নিয়ে গর্ব ভরে একা দাঁড়িয়ে থাকেন আবু বকরের কণ্যা।

হত্যার পর তার শরীরের উপর চালানো হয় চরম নিষ্ঠুরতা।মায়ের সামনে কাটা মস্তক এনে বিদ্রুপ করতে থাকে উমাইয়ারা। এই নৃশংসতার নেতৃত্বে ছিলেন ইরাকের কুখ্যাত সেনাপতি হাজ্জাজ বিন ইউসুফ।

কারবালার যুদ্ধে যেমন নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ইমাম হোসাইন একাই লড়েছিলেন, তেমনি ইবনে জুবায়েরও  ইসলামের জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে একাই যুদ্ধের ময়দানে গিয়েছিলেন উমাইয়া বাহিনীর বিপক্ষে।

হায় আফসোস ! ইমাম হোসেনের মৃত্যুকে সহ্য করতে হয়নি তার মা ফাতেমাকে কিন্তু নিজ সন্তানের কাটা মস্তক আর ছিন্নভিন্ন রক্তাত্ব শরীর সহ্য করতে হয়েছে বৃদ্ধা মাতা আসমাকে।শহীদ মাতা গর্ভ ভরে আল্লার কাছে ফরিয়াদ করেন ‘নিশ্চয়ই তুমি আমার মনের ইচ্ছা পুরুন করেছো, আমার সন্তান ইসলামের সম্মান বাঁচতে জীবন দিযেছে মা হিসেবে এর চাইতে আমরা আর গর্বের কি আছে !’

৬৮০ সালে কারবালা যুদ্ধ দিয়ে শুরু হওয়া ইসলামের দ্বিতীয় ফিতনা শেষ হয় ৬৯২ সালে।

এরপর ইসলামী উম্মাহ একমাত্র ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন আব্দুল মালেক ইবনে মারওয়ান। শুরু হয় উমাইয়াদের দীর্ঘমেয়াদী শাসন।

৬৬১ থেকে সাল মোট ৮৯ বছর ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলেন উমাইয়ারা। শেষে আব্বাসীয় খিলাফতের কাছে ক্ষমতা হারান ৭৫০ সালে আরব থেকে বিতাড়িত হয়ে আফ্রিকার কর্ডোবায় তাদের বংশের শাসন চালু রাখেন। ১০৩১ সালে কর্ডোবায় তারা ক্ষমতা হারালে, পৃথিবী থেকে উমাইয়াদের শাসন চিরতরে শেষ হয়।

আরো পড়ুন :

কারবালা : বেদনার এক ইতিহাস (পুরো পর্ব)

ইয়াজিদের শাসনকালে অত্যাচার

চার খলিফা: ইসলামের সংঘাত ও অর্জনের ২৯ বছর !

ইয়াজিদের মৃত্যু যেভাবে হল

ভিডিও সৌজন্য : Banglabox

৩৭৩ thoughts on “ইয়াজিদের মৃত্যু পবরর্তী দ্বন্দ্ব ও সংঘাত !

  1. 200005 247868Considerably, the story is in reality the greatest on this noteworthy topic. I agree with your conclusions and will eagerly watch forward to your next updates. Saying nice one will not just be sufficient, for the fantastic clarity in your writing. I will immediately grab your rss feed to stay privy of any updates! 891115

  2. Pingback: 3magnanimous
  3. Pingback: What does God dang
  4. Pingback: levitra kopen
  5. My programmer is trying to persuade me to move to .net from PHP. I have always disliked the idea because of the expenses. But he’s tryiong none the less. I’ve been using Movable-type on a number of websites for about a year and am worried about switching to another platform. I have heard fantastic things about blogengine.net. Is there a way I can transfer all my wordpress content into it? Any kind of help would be really appreciated!

  6. Howdy I am so glad I found your web site, I really found you by mistake, while I was researching on Aol for something else, Regardless I am here now and would just like to say kudos for a remarkable post and a all round exciting blog (I also love the theme/design), I don’t have time to go through it all at the minute but I have saved it and also included your RSS feeds, so when I have time I will be back to read a lot more, Please do keep up the awesome job.

  7. Good day I am so grateful I found your web site, I really found you by error, while I was searching on Digg for something else, Anyhow I am here now and would just like to say thanks a lot for a incredible post and a all round thrilling blog (I also love the theme/design), I dont have time to read through it all at the minute but I have book-marked it and also included your RSS feeds, so when I have time I will be back to read a great deal more, Please do keep up the superb b.

  8. I’ve been exploring for a little for any high-quality articles or blog posts in this kind of area . Exploring in Yahoo I at last stumbled upon this site. Reading this info So i’m glad to show that I have a very good uncanny feeling I came upon exactly what I needed. I so much no doubt will make certain to don?t overlook this web site and give it a look on a constant basis.

  9. First off I would like to say fantastic blog! I had a quick question which I’d like to ask if
    you do not mind. I was interested to know how you center yourself and clear your mind
    prior to writing. I’ve had a hard time clearing my thoughts in getting my thoughts out.
    I truly do enjoy writing but it just seems like the first 10
    to 15 minutes tend to be lost just trying to figure out how to begin. Any suggestions or tips?
    Thanks!

  10. hey there and thank you for your info – I have definitely picked up something new from right here.

    I did however expertise several technical points using this website, as I
    experienced to reload the web site many times previous to I could get it to
    load properly. I had been wondering if your hosting is OK?
    Not that I’m complaining, but sluggish loading instances times will often affect your
    placement in google and can damage your high quality score if ads and
    marketing with Adwords. Well I’m adding
    this RSS to my e-mail and could look out for a
    lot more of your respective exciting content. Ensure that you update this again soon.

  11. Unquestionably believe that which you said. Your favorite justification seemed to be on the web the simplest thing to be aware
    of. I say to you, I certainly get irked while people
    consider worries that they just do not know about.
    You managed to hit the nail upon the top and defined out the whole thing without having side-effects
    , people can take a signal. Will likely be back to get more.
    Thanks

  12. Ищете надежного подрядчика для устройства стяжки пола в Москве? Обращайтесь к нам на сайт styazhka-pola24.ru! Мы предлагаем услуги по залитию стяжки пола любой сложности и площади, а также гарантируем быстрое и качественное выполнение работ.

  13. Нужна стяжка пола в Москве, но вы не знаете, как выбрать подрядчика? Обратитесь к нам на сайт styazhka-pola24.ru! Мы предлагаем услуги по устройству стяжки пола любой площади и сложности, а также гарантируем быстрое и качественное выполнение работ.

  14. Хотите получить идеально ровный пол без лишних затрат? Обратитесь к профессионалам на сайте styazhka-pola24.ru! Мы предоставляем услуги по стяжке пола м2 по доступной стоимости, а также устройству стяжки пола под ключ в Москве и области.

  15. Ищете профессионалов для механизированной штукатурки стен в Москве? Обратитесь к нам на сайт mehanizirovannaya-shtukaturka-moscow.ru! Мы предлагаем услуги по машинной штукатурке стен любой сложности и площади, а также гарантируем быстрое и качественное выполнение работ.

  16. Ищете профессионалов для механизированной штукатурки стен в Москве? Обратитесь к нам на сайт mehanizirovannaya-shtukaturka-moscow.ru! Мы предлагаем услуги по машинной штукатурке стен любой сложности и площади, а также гарантируем быстрое и качественное выполнение работ.

  17. hey there and thank you for your information – I have
    certainly picked up something new from right here.
    I did however expertise some technical issues using this site, since I experienced to reload the website many times previous to I could get it to load properly.
    I had been wondering if your web host is OK? Not that I am complaining, but slow loading instances times will sometimes affect your placement in google and can damage your quality score
    if advertising and marketing with Adwords. Anyway I am adding this RSS to my email and can look out for
    a lot more of your respective exciting content.
    Ensure that you update this again soon.

  18. Hello! I know this is kinda off topic however , I’d figured I’d ask.
    Would you be interested in trading links or maybe guest writing a
    blog article or vice-versa? My site covers a lot
    of the same topics as yours and I believe we could greatly benefit from each other.

    If you happen to be interested feel free to shoot me
    an email. I look forward to hearing from you!

    Excellent blog by the way!

  19. Hello there! I know this is kinda off topic
    nevertheless I’d figured I’d ask. Would you be interested in exchanging links or
    maybe guest authoring a blog post or vice-versa?
    My blog addresses a lot of the same topics as yours and I
    feel we could greatly benefit from each other.
    If you’re interested feel free to send me an email.
    I look forward to hearing from you! Superb blog by the way!

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x