পারভেজ সেলিম
(পর্ব : ০২)
আজ থেকে ৩০ হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে নিয়ান্ডার্থালরা। নিয়ান্ডার্থালদের মস্তিষ্ক স্যাপিয়ান্সদের চাইতে বেশ বড় ছিল, তারা অনেক পেশিবহুল ও শক্তিশালী ছিল তবু স্যাপিয়ান্স নয় বিলুপ্ত হয়ে যায় নিয়ান্ডার্থালেরা। কিন্তু কেন?
৩ লক্ষ বছর আগে মানুষের ৯ টি প্রজাতি হেঁটে বেড়িয়েছে পৃথিবীতে। এখন শুধুমাত্র হোমো স্যাপিয়ান্সরা টিকে আছে। স্যাপিয়্যান্সদের চাইতে বেশি বুদ্ধিমান হবার পরও নিয়ান্ডারথালরা কেন হেরে গেল তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর মতপার্থক্য । তবে এই নিয়ে দুই ধরণের তত্ত্ব সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
এক. সংকর প্রজনন তত্ত্ব।
ইউরোপ ও এশিয়ায় হোমো সেপিয়ান্স ও নিয়ান্ডার্থালেদের একসাথে অনেক বছর বসবাসের তথ্য পাওয়া যায়।
২০২২ সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী ড.সেভান্তে পেবো ডিএনএ গবেষণার ফলাফল জানালেন, হোমো স্যাপিয়ান্সের সাথে নিয়ান্ডালথালের যৌন সম্পর্ক হয়েছিল এবং বংশবিস্তার করেছিল। এর ফলে মানুষের ইতিহাস পাল্টে যায়।
ইউরোপ এশিয়ার মানুষকে তাহলে আর পরিশুদ্ধ হোমোস্যাপিয়েন্স বলা যায় না! তারা নিয়ান্ডার্থাল ও স্যাপিয়ান্সের সংকর। এখন পর্যন্ত গবেষণা তাই বলছে। নোবেল দেয়া হয়েছে ড. পেবোকে।
নিয়ানডার্থাল প্রথম ফসিল পাওয়া গিয়েছিল ১৮৫৬ সালে, জার্মানির নিয়ানডার উপত্যকায়। এই উপত্যকার নাম থেকেই নিয়ানডার্থাল নামটি এসেছে
পরবর্তী গবেষণায় ইউরোপের মানুষের শরীরে ১-৪% ডিএনএর মিল পাওয়া যায় নিয়ানডার্থালদের সাথে। আর ডেনিসোভার মানুষের সাথে বর্তমান অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসীদের ডিএনএ মিলে যায় ৬%।
৬০ হাজার বছর আগে হোমো স্যাপিয়ান্সরা চীনে পৌঁছায়। হোমো ইরাক্টাসদের সাথে স্যাপিয়ান্সরা মিলেমিশে সন্তান উৎপাদন করতে থাকে।
ধারণা করা হয়, এই সংকর প্রজননের ফলে কয়েক হাজার বছরে হোমো স্যাপিয়ান্সদের সাথে মিশে গিয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে সম্ভাবনাময় মানুষের দুুটি প্রজাতি নিয়ান্ডার্থাল আর ইরেক্টাসরা। কিন্তু তার স্বপক্ষে পুরোপুরি অবস্থান নেবার মতো প্রমাণাদি এখনও পাওয়া যায় না। তাই অন্য আরেকটি তত্ত্ব জনপ্রিয় হচ্ছে, আর সেটি হলো প্রতিস্থাপন তত্ত্ব।
দুই. রিপ্লেসমেন্ট থিউরি বা প্রতিস্থাপন তত্ত্ব। মানুষের অন্য প্রজাতী বিলুপ্ত হবার পিছনে স্যাপিয়ান্সদের এক বিশাল ভূমিকা আছে বলে ধরা হয়।
স্যাপিয়্যান্সরা যখন যেখানে পৌঁছেছে সেখানকার আদিবাসী প্রাণীদের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে। কখনো কখনো তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
স্যাপিয়ান্সরা আদি থেকেই অসহিষ্ণু। এখনও তার প্রমাণ পাওয়া যায়। হতে পারে হোমো স্যাপিয়্যান্সরা খাদ্যের প্রযোজনে নিয়ান্ডার্থালদের সাথে যুদ্ধ শুরু করেছিল। অসংখ্য নিয়ান্ডারথাল হয়ত হত্যার শিকার হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে মানব ইতিহাসের এটাই ছিল প্রথম গণহত্যা।
এছাড়া জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে না পারা এবং খাদ্যাভাসের খুব পরিবর্তন না করতে পারায় নিয়ান্ডার্থালরা বিলুপ্ত হয়েছে বলে অনেকের মত
যেভাবেই হোক ধীরে ধীরে হোমো স্যাপিয়ান্স দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে নিয়ান্ডার্থাল, ইরেক্টাসসহ মানুষের অন্য প্রজাতীরা। পরবর্তীতে তাদের জিনও বিলুপ্ত হয়ে যায়।
একসাথে এক আকাশের নিচে :
মানুষের বিভিন্ন প্রজাতি একের পর এক পৃথিবীতে এসেছে এবং বিলুপ্ত হয়েছে এমন ধারণাটা সঠিক নয়। অনেক কয়েকটি প্রজাতীর মানুষ একসাথে একি সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বেড়ে উঠেছিল।
পূর্ব এশিয়ায় বা চীনে যখন হোমো ইরাক্টাসরা দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন হয়ত ইউরোপে নিয়ান্ডার্থালের জয়জয়কার চলছে, ওদিকে পুর্ব আফ্রিকায় হোমো রুডলফেনসিস, হোমো এরগ্যাস্টার কিংবা হোমো স্যাপিয়্যান্সদের পূর্বপুরুষরা হয়ত খাবারের সন্ধান করছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ‘হোমো সলোয়েনসিস’ আর ফ্লোরেস নাম ছোট দ্বীপে ‘হোমো ফ্লোরেন্সিস’ প্রজাতীর ভিন্ন ভিন্ন মানুষেরা হয়ত এক চাঁদের আলোয় জীবন যাপন করছে একই সময়ে।
এর মধ্যে হোমো ইরাক্টাসরাই সবচেয়ে বেশি ২০ লক্ষ বছর টিকে ছিল পৃথিবীতে। মানুষের আর কোন প্রজাতি এত দীর্ঘ সময় টিকে থাকেনি। স্যাপিয়ান্সরাও এই রেকর্ড ভাঙ্গতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ আধুনিক সেপিয়ান্সদের বর্তমান বয়স ২/৩ লক্ষ বছরের বেশি হবার নয়।
হোমো এরগ্যাস্টার, হোমো ইরাক্টাস, হোমো রুডলফেনসিস, হোমো নিয়ান্ডার্থাল, হোমো সলোয়েনসিস, হোমো ডেনিসোভা, হোমো ফ্লোরেন্সিয়ানসিস এরা সকলেই বিভিন্ন প্রজাতীর মানুষ। সকলেই একে একে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। এখন টিকে আছে শুধু ‘হোমো স্যাপিয়ান্স’ প্রজাতীটি। যাকে আমরা আধুনিক মানুষ বলছি।
‘হোমো সলোয়েনসিসরা’ হারিয়ে যায় ৫০ হাজার বছর আগে, এরপর বিলুপ্ত হয় ডেনিসোভারা, ৩০ হাজার বছর আগে শেষ হয় নিয়ান্ডার্থাল, আর ইরেক্টাসরা বিলুপ্ত হয়েছে ১.৫ লক্ষ বছর আগে। সবশেষ মানুষের যে প্রজাতীটি হারিয়ে যায় তারা হলো ফ্লোরেস দ্বীপের বামন আকৃতির মানুষ, যারা ‘হোমো ফ্লোরেন্সিয়ানসিস’ নামে পরিচিত। সময়টা ১২ হাজার বছর আগে।
এরপর পৃথিবীর একক রাজা হয়ে ওঠে ‘হোমো স্যাপিয়ান্সরা’। প্রতিদ্বন্দীহীন পৃথিবীর এক বিশাল শক্তিধর সম্রাট।
(চলবে..)
পারভেজ সেলিম
লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকর্মী
vip izmir travesti sitesini arıyorsan tıkla ve hemen vip izmir travesti sitesine giriş yap.
I do trust all the ideas youve presented in your post They are really convincing and will definitely work Nonetheless the posts are too short for newbies May just you please lengthen them a bit from next time Thank you for the post
yasam ayavefe best man
I like this weblog it’s a master piece! Glad I found this ohttps://69v.topn google.Raise range
Thanks for breaking this down into easy-to-understand terms.