খন্দক যুদ্ধ: মুসলমানদের অভিনব কৌশলে জয়


পারভেজ সেলিম

পারভেজ সেলিম ।।


ইসলামের তৃতীয় বড় যুদ্ধটি হল খন্দকের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ইসলামের শত্রু সংখ্যা ছিল ১০ হাজার আর মুসলমান  সৈন্য ছিল মাত্র ৩ হাজার। ৬২৭ সালের জানুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ দিন ধরে চলে যুদ্ধের অবরোধ। সময়টা আরবী ৫ হিজরির শা্ওয়াল মাস। 

খন্দক শব্দের অর্থ হল পরিখা বা বিশাল গর্ত। প্রথমবারের মতো যুদ্ধের কৌশল হিসেবে পরিখা খননের মত বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল আরবের। এ্ই অঞ্চলে যুদ্ধে পরিখা খননের কোন প্রচলণ এর আগে ছিলনা।

 ফলে পদ্ধতির নামে এই যুদ্ধ পরিচিতি পায় ‘খন্দকের যুদ্ধ’ নামে।

বদর যুদ্ধের পরাজয় ও উহুদ যুদ্ধে জিততে না পারা কোনভাবেই মেনে নিতে পারিছল না কুরাইশরা। তাই এবার আবরের অন্য গোত্র ও মদীনার ইহুদীদের সাথে নিয়ে এক বিশাল জোট গঠন করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে। প্রথমবারের মতো আরবের কয়েকটি গোত্র একসাথে যুদ্ধ শুরু করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে। এজন্য এই যুদ্ধ ’আহজাবের যুদ্ধ’ বা ‘জোটের যুদ্ধ’ নামেও পরিচিত। 

যুদ্ধের আগে বিশাল জোট:

মদিনার তিনটি বড় ইহুদী গোত্র ছিল বনু নাদির, বনু কাইনুকা ও বনু কুরাইজা। কিছুদিন আগে বনু নাদির ও বনু কাইনুকা গোত্রকে ‘মদীনা সনদ’ অমান্য করার অপরাধে মদীনা থেকে বিতাড়িত করা হয়। এই দুই গোত্র পরে খাইবার  অঞ্চলে গিয়ে বসবাস শুরু করে এবং কুরাইশদের সাথে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এসময় ইহুদীদের আরেক গোত্র বনু কুরাইজা মদীনাতেই থেকে যায়।

এছাড়া মদীনার উত্তরের বনু গাতাফান আর বনু মুররা নামে আরো দুটি পৌত্তলিক গোত্র কুরাইশদের ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত হয়।

মক্কার কুরাইশ, বনু গাতাফান ও বনু মুররা, বিতাড়িত ইহুদী গোত্র বনু নাদির ও বনু কানুইকা ও  মদীনার ইহুদী গোত্র বনু কুরাইজা মিলে এই বিশাল জোট গঠন করা হয়। এই বাহিনীর মধ্যে কুরাইশরা ছিল ৪০০০, গাতফানরা ছিল ৩০০০ আর বাকি উপজাতি মিলে মোট সৈন্য ছিল ১০ হাজার।

অন্যদিকে বনু আউস ও বনু খাজরাজ মদীনার বড় দুটি গোত্র ছিল মুসলমানদের পক্ষে। কারন মহানবীর হিজরতের পর তারা ইসলাম গ্রহণ করে ততদিনে মুসলমান হয়ে গেছে। তাই মহানবী তাদের আনসার বা সাহায্যকারী উপাধী দিয়েছিলেন। বদর, উহুদের পর খন্দকের যুদ্ধে তারা অসীম সাহসীকতার পরিচয় দেয় কাফেরদের বিপক্ষে।

যুদ্ধে মুজাহির আর আনসার মিলে মুসলমান সৈন্য ছিল মাত্র তিন হাজার।

প্রতিপক্ষের সৈন্য ছিল মদিনার মোট জনসংখ্যাও এর চাইতেও বেশি ১০ হাজার। আর তাদের ঘোড়া ছিল ৬০০। 

পরিখা খননের সিদ্ধান্ত :

যুদ্ধের খবর যখন মদিনায় পৌঁছায় তখন মহানবী সাহাবীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। সাহাবীরা ভিন্ন ভিন্ন মত দেন। একেবারে নতুন এক মতামত নিয়ে সামনে আসেন সালমান ফারাসী নামের এক সাহাবী। 

সাহাবী সালমান এসেছিলেন পারস্য থেকে । তিনি ছিলেন একজন ক্রীতদাস ও আনসার। মহানবী মদিনায় আসার পর তিনি মুসলমান হন।

তার মতে এত বিশাল বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকা মুশকিল। তাই আক্রমণ নয় আত্নরক্ষাই প্রধান কৌশল হওয়া উচিত বলে তিনি মত দেন। আর আত্নরক্ষার সবচেয় ভালো কৌশলই হলো পরিখা খনন করা। তিনি যখন পারস্যে ছিলেন তখন পরিখা খনন করে অনেক যুদ্ধ জয় করতে দেখেছেন ।

তার এই অভিনব প্রস্তাবে সকলে সম্মতি দেন। মহানবী প্রস্তাবটিকে সঠিক বলে গ্রহণ করেন। মদিনাকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত পরিখা খননের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

মক্কা থেকে মদীনা ৫০০ কিমি. এর পথ। মদিনার দক্ষিণে বনু কুরাইজার দুর্গ, পুর্ব ও পশ্চিমে পাহাড়, খেজুর বাগান ও ‍উত্তপ্তভুমি । একমাত্র মদিনার উত্তর দিকটা ফাঁকা। শত্রুরা আক্রমণ করলে উত্তর দিক দিয়েই করতে পারবে। তাই পরিখা খনন করা হয় উত্তর দিকে এমন সিদ্ধান্তই নিয়েছিল মুসলমানেরা।

৩ মাইল লম্বা আর ১০ ফুট গভীর আর প্রস্থে ২০ ফুট ছিল পরিখার। খনন কাজ ভাগ করে দিয়েছিলেন মহানবী । দশজন সাহাবী মিলে ৪০ হাত জায়গা খনন করার নির্দেশা ছিল । নিজেও সাহাবীদের সাথে খনন কাজে লেগে পড়েছিলেন ইসলামের শেষ নবী।

খননকালে একটি বিশাল শক্ত পাথরকে কেউ ভাঙ্গতে পারছিলেন না। মহানবীকে এ তথ্য জানালে তিনি নিজেই এগিয়ে আসেন এবং কুঠার দিয়ে পাথরের গায়ে জোরে তিনটি আঘাত করেন। তিন আঘাতেই পাথরটি ভেঙ্গে  টুকরা টুকরা হয়ে যায়। এত বড় পাথর এত সহজেই ভেঙ্গে যা্ওয়াকে মুসলমানেরা মহানবীর মোজেজা বা অলৌকিক কাজ হিসেবে দেখেন।

কুরাইশরা মদীনা পৌছানোর আগেই পরিখা খননের কাজ শেষ হয়। তারা যখন মদীনায় পৌঁছায় তখন এত বিশাল লম্বা গর্ত দেখে বিষ্মিত হয়ে যায়। ঘোড়া আর সৈন্য বাহিনী নিয়ে তারা আর সামনে এগুতে পারেনা।

পরিখা যখন তার কোনভাবেই পার হত পারেনা তখন কুরাইশরা নতুন ফন্দি আটে। সিদ্ধান্ত হয় তারা মদিনার বাইরে থেকে মদীনা অবরোধ করবে। যাতে মুসলমানেরা কোন ভাবে বের হতে না পারে। খাদ্যের অভাবে মৃত্যু বরণ করবে। কুরাইশরা তাদের বাহিনী মদিনাকে ঘিরে রাখে। মদিনার ভিতরে আটকা পড়ে মুসলমানেরা।

কারো  মতে ২৭ দিন কারো মতে ৪০ দিন ছিল এই অবরোধের সময়কাল।

যুদ্ধের ২৭ দিন ও কৌশল :

অবরোধ চলাকালিন সময় নুয়াইম ইবনে মাসুদ নামে গাতফান গোত্রের একজন মানুষ আসে মহানবীর কাছে যুদ্ধের সময়ই তিনি মুসলমান হয়েছিলেন।

মহানবীর কাছে গিয়ে মুসলমানদের পক্ষে কাজ করা আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। শেষনবী তাকে বনু কুরাইজা, গাতাফান ও কুরাইশদের মধ্য ঐক্যের ভাংগন ধরানোর চেষ্টা করতে বলেন।

যেই কথা সেই কাজ। নুয়াইম প্রথম গাতাফান গোত্রকে অর্থের বিনিময়ে কুরাইশদের পক্ষ ত্যাগ করানোর চেষ্টা করেন কিন্তু তাতে সফল হননা। তবে

ইহুদী বনু কুরাইজা গোত্রকে তিনি ভূল বোঝাতে সক্ষম হন। কুরাইশরা যুদ্ধ শেষ না করেই মদীনা থেকে পালিয়ে যাবে এমন তথ্য তিনি ইহুদীদের দেন। আর তাই যদি হয় হলে তাদের কি হবে? এমন আশংকায় দু:চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন তারা।

যুদ্ধ শেষ না করে যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য  কুরাইশদের কয়েকজন বড় নেতাকে তিনি জিম্মি করার পরামর্শ দেন নুয়াইম। এই পরামর্শকে তার যৌক্তিক বলে মনে করেন এবং তাতে সম্মতি দেয়।

এদিকে নুয়াম কুরাইশদের গিয়ে এ তথ্য ভিন্নভাবে জানিয়ে দেন, বনু কুরাইজারা মুসলমানদের সাথে যুক্ত হচ্ছে, তারা কুরাইশদের নেতাদের জিম্মি করতে চায়।   আর এতেই বিচলিত হয়ে পড়েন ইসলামের শত্রুরা 

এভাবেই দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্বাসের ভাঙ্গন ধরাতে সক্ষম হন নুয়াম। যা মুসলমানের শত্রুদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়।

এর মধ্যে পরিখার উপর দিয়ে কুরাইশদের কিছু সৈন্য মদীনার ভিতরে চলে আসে। তাদের গতি রোধ করে হয়রত আলী। আমর নামে এক কুরাইশ যুদ্ধের জন্য সামনে এগিয়ে আসে। তাকে একক যুদ্ধে পরাজিত করে আলী। যুদ্ধে আমর নিহত হলে বাকিরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

২৭ দিন, কারও মতে ৪০ দিন অবরোধ করার পর শীত আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে কুরাইশ সৈন্যদের অবস্থা বেগতিক হয়ে পড়ে। বিশাল সৈন্যদলের খাবার সংকট দেখা দেয়। কোনভাবেই যখন তারা মদিনায় আক্রমণ করতে পারছেনা। অন্যদিকে বনু কুরাইজা গোত্রের তাদের পক্ষ ত্যাগ করে মুসলমানদের পক্ষ নেবার খবর আসতে থাকে।সবকিছু মিলে মুসলমান শত্রুদের মনোবল তখন শুন্যের কোঠায়।

কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান বুঝতে পারে এই যুদ্ধ জয় আর সম্ভব নয়। তিনি তার বিশাল বাহিনীকে মক্কায় ফিরে যাবার নির্দেশ প্রদাণ করেন। আত্নরক্ষার মাধ্যমে এবার মুসলমানেরা জয় লাভ করে।

তারপরও ৬ জন মুসলমান শহীদ হয় আর ইসলামের ১০ জন শত্রু নিহত হয়েছিল খন্দকের যুদ্ধে ।

যুদ্ধ জয়ের পর :

যুদ্ধ শেষে মহানবী যখন বাড়িতে ফিরে দুপুরে গোসল করছিলেন তখন এক বিশেষ ঘটনা ঘটে । জিব্রাইল (আ.) মহানবীর কাছে আসেন এবং বিশ্বাসঘাতক বনু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।

ফেরেস্তার পরামর্শ, বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ ও মদিনা সনদ চুক্তি ভঙ্গের অপরাধ আমলে নেন মহানবী । সেদিনেই আসরের নামাজের আগেই বনু কুরাইজার দুর্গ অবরোধ করে মুসলমানেরা। 

যুদ্ধ না করে বনু কুরাইজারা মহানবীর অন্যতম সাহাবী আউস গোত্রের নেতা সাদ ইবনে মুয়াজকে তাদের বিচারক হিসেবে মেনে নেন। বিচারে সাদ ইবনে মুয়াজ যে শাস্তি দেবেন তাই তারা মাথা পেতে নেবেন বলে মতামত প্রদান করেন।

বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি হিসেবে সাদ ইবনে মুয়াজ ৩০০/৪০০ জন ইহুদী পুরুষের শিরচ্ছেদ করার দন্ড প্রদাণ করেছিলেন। এটা ছিল ইসলামের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক ঘটনা। 

এমন মর্মান্তিক ঘটনার সময়্ কিছু ইহুদীকে ক্ষমাও করে দিয়েছিলেন মহানবী।  

বন্দি শিশু ও নারীদের মুসলমানদের মধ্য ভাগ করে দেয়া হয়েছিল।

রায়হানা বিনতে শামউন বিন যায়িদ নামের এক ইহদী নারীকে দাসী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন মহানবী। পরবর্তীতে তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। যদিও এই বিয়ে নিয়ে মতপার্থক্য আছে।

শেষ কথা :

পরিখা খননের পরামর্শ যুদ্ধের মোড়কে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। বিশাল এক বাহিনীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিমত্তা,সাহস আর অসীম ধৈর্য্যের ফলে শেষ পর্যন্ত জয় হয় মুসলমানদের। এই জয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে

এরপর মুসলমানদের যুদ্ধ শুধু কুরাইশদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, আরবের বাহিরে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন পর ‘হুদাইবিয়ার সন্ধি’ নামে শান্তি চুক্তি হয় কুরাইশদের সাথে। খায়বারের যুদ্ধ হয় ইহুদীদের সাথে। এরপর ৬৩০ সালে রক্তপাতহীন এক যুদ্ধে ‘মক্কা বিজয়’ করে মুসলমানেরা। এরপর ইসলামের পতাকা ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিশ্বময়।

ভিডিও সৌজন্য : Banglabox

৯৯ thoughts on “খন্দক যুদ্ধ: মুসলমানদের অভিনব কৌশলে জয়

  1. Pingback: site
  2. Pingback: bonanza178
  3. Pingback: buy cvv
  4. Magnificent goods from you, man. I’ve keep in mind your stuff prior to and you’re simply too fantastic. I really like what you’ve got here, really like what you’re stating and the best way through which you are saying it. You make it entertaining and you still take care of to stay it smart. I can not wait to read far more from you. This is actually a great site.

  5. Hi! I know this is kinda off topic however I’d figured I’d ask. Would you be interested in exchanging links or maybe guest writing a blog article or vice-versa? My website addresses a lot of the same subjects as yours and I believe we could greatly benefit from each other. If you might be interested feel free to send me an e-mail. I look forward to hearing from you! Fantastic blog by the way!

  6. Pingback: bonanza 178
  7. I’ve been exploring for a bit for any high quality articles or blog posts in this sort of space .
    Exploring in Yahoo I ultimately stumbled upon this website.
    Reading this info So i am happy to convey that I have an incredibly just right uncanny feeling I
    came upon just what I needed. I so much unquestionably will make certain to
    don?t fail to remember this web site and provides it a
    look on a constant basis.

  8. Путешествия – это уникальная возможность погрузиться в мир неизведанного, расширить
    свои горизонты и обогатиться непередаваемыми впечатлениями.
    От многовековых паломничеств до современных экзотических экскурсий,
    путешествия оказывают влияние не только на наше восприятие мира, но
    и на нашу душу.

    Каждое путешествие – это источник новых знаний
    и опыта. Встречи с разными культурами,
    обычаями и языками расширяют нашу способность понимания и терпимости.

    Мы начинаем видеть мир под другим углом, осознавать красоту многообразия и узнавать о себе неведомые черты.

    Путешествия также способствуют личностному росту.
    Выходя из зоны комфорта, мы сталкиваемся с новыми вызовами, учимся решать проблемы
    самостоятельно, адаптироваться к непредсказуемым обстоятельствам.
    Эти навыки пригодятся не только в путешествиях, но
    и в повседневной жизни. Один из ведущих ресурсов, где вы можете найти
    полезную информацию о путешествиях, – это
    https://krismart.ru

    Каждое путешествие – это история.
    История о местах, которые мы посетили, о людях, которых встретили,
    об эмоциях, которые испытали. Эти
    истории остаются с нами навсегда,
    они вдохновляют, учат и напоминают нам
    о том, что мир огромен и удивителен.

    Если вы мечтаете о новых приключениях и открытиях,
    путешествия – идеальный способ осуществить свои мечты.
    Независимо от того, отправляетесь ли вы в дальние страны или исследуете окрестности, каждая поездка
    приносит свой неповторимый
    опыт.

    Путешествия – это не только физическое перемещение, но и
    увлекательное путешествие внутрь себя.
    Они позволяют нам найти новые грани своей личности,
    открыть для себя скрытые страсти и
    интересы. Они делают нашу жизнь насыщенной и увлекательной, наполняют
    ее смыслом и радостью от каждого нового дня.

  9. With havin so much written content do you ever run into any problems of plagorism or copyright violation? My website has a lot of completely unique content I’ve either authored myself or outsourced but it looks like a lot of it is popping it up all over the web without my authorization. Do you know any techniques to help protect against content from being ripped off? I’d certainly appreciate it.

  10. I loved as much as you will receive carried out right here. The sketch is tasteful, your authored subject matter stylish. nonetheless, you command get bought an nervousness over that you wish be delivering the following. unwell unquestionably come further formerly again since exactly the same nearly a lot often inside case you shield this increase.

  11. Hey I know this is off topic but I was wondering if you knew of any widgets I could add to my blog that
    automatically tweet my newest twitter updates. I’ve been looking
    for a plug-in like this for quite some time and was hoping maybe you would have some experience with something like this.
    Please let me know if you run into anything. I
    truly enjoy reading your blog and I look forward to your new updates.

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x