সভ্যতার সন্ধানে: রহস্যময় প্রাচীন সভ্যতা

মানুষ যখন ছোট গোষ্ঠীতে গুহায় জীবনযাপন করত, তখন থেকেই চারপাশে তৈরি হয়েছিল কিছু নিয়ম, শৃঙ্খলা এবং সামাজিক কাঠামো, যা মানুষের সভ্যতা নির্মানে ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এরপর একে একে মানুষ ঘর থেকে শহর, রাস্ট্র থেকে সাম্রাজ্য বানিয়ে ফেলেছে। প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস তাই মানবজাতির উন্নতির সাক্ষী।

ইতিহাসে খুব প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ন অনেক সভ্যতা থেকে মাত্র ১২টিকে বেছে নিয়েছি।

১. মেসোপটেমিয়া সভ্যতা, ইরাক (খ্রি.পূ ৩৫০০- ৫০০ অ্)

২. মিশরীয় সভ্যতা, মিশর (খ্রি.পূ ৩১৫০ – ৩১ অব্দ)

৩. সিন্ধু সভ্যতা, পাকিস্তান-ভারত  (খ্রি.পূ  ৩৩০০ -১৩০০ অব্দ)

৪. ফিনিশীয় সভ্যতা, লেবানন-সিরিয়া (খ্রি.পূ ২৫০০ -৫৩)

৫. চীনের সভ্যতা, চীন (খ্রি.পূ ২০৭০- ২২১ অব্দ)

৬. মায়া সভ্যতা, মেক্সিকো-গুয়াতেমালা, (খ্রি.পূ ২০০০ -খ্রিস্টাব্দ ১৫০০)

৭. জেরুজালেম-কেন্দ্রিক ইহুদি সভ্যতা (খ্রি.পূ ১৫০০ – বর্তমান)

৮. গ্রীক সভ্যতা, গ্রিস (খ্রি.পূ ১২০০ -খ্রিস্টাব্দ ৩০০)

৯. রোমান সভ্যতা,রোম, (খ্রি.পূ ৭৫৩ -খ্রিস্টাব্দ ৪৭৬)

১০. পারস্য সভ্যতা, ইরান (খ্রি.পূ ৫৫০ -খ্রিস্টাব্দ ৩৩)

১১. অ্যাজটেক সভ্যতা, মেক্সিকো (খ্রিস্টাব্দ ১৩০০ – ১৫২১)

১২. ইনকা সভ্যতা, পেরু, ইকুয়েডর ও চিলি (খ্রি. ১৪৩৮ -১৫৩৩)

প্রাচীনকালের এই বারোটি রহস্যময় ও প্রভাবশালী সভ্যতার অলিগলিতে এবার নজর দেয়া যাক।

১. মেসোপটেমিয়া সভ্যতা 

মানব ইতিহাসের প্রথম সভ্যতাটিই হলো মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। আনুমানিক ৩৫০০ খ্রি.পূর্বে বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউরেতিস ন মাঝে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই সভ্যতার।

মেসোপটেমিয়া সভ্যতা আসলে অনেক কয়েকটি সভ্যতার সমষ্টি। সুমেরীয়, আক্কাদীয়, বাবিলনীয়, অ্যাসিরিয়াও, ক্যালডিও বা নব্য-ব্যবলনীয় সভ্যতা।

উরুক, উর, কিশ, আক্কাদ, নিনেভে ও ব্যাবিলন ছিল এই সভ্যতার বিভিন্ন সময়ের সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী শহর। 

গিলগামেশ, সারগন, হাম্মরাবি, সেনাচেরিব, নেবুচাডনেজার-২ ছিল এই সভ্যতার সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজা।

 এই সভ্যতার সুমেরীয়রা প্রথম লিখন পদ্ধতি, ‘কিউনিফর্ম’ উদ্ভাবন করে। এছাড়া আক্কাদীয়দের বাণিজ্য নেটওয়ার্ক, ব্যাবিলনের হাম্মুরাবির আইনের শাসন, অ্যাসিরিওদের দেবতার ধারনা , ক্যালডিও নেবুচাদনেচারের বানানো শুণ্যউদ্যান মেসোপটেমিয়া সভ্যতাকে অমর করে রেখেছে।

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আর বহিরাগতদের আক্রমণের ফলে এই সভ্যতার পতন ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সালে।

২.মিশরীয় সভ্যতা 

প্রাচীন কালের দ্বিতীয় গুরত্বপুর্ণ ও রহস্যেভরা সভ্যতাটি হলো মিশরীয় সভ্যতা। নীল নদের উপত্যকায় বিকাশ লাভ করা এই সভ্যতার শুরুটা খ্রিস্টপূর্ব ৩১৫০ সালে। তাদের পিরামিড, বিশেষত গিজার ‘গ্রেট পিরামিড’, বিশ্ববাসীকে আজও বিস্মিত করে।

স্থাপত্য বিদ্যায় কতটা পারদর্শী হলে এমন বিশাল উচ্চতার স্থাপনা তৈরি করা সম্ভব আধুিক ানুষ বিদ্যাবুদ্ধিতে তা এখনও অজানা।

বিশাল বিশাল পিরামিডগুলো রাজাদের কবর হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। মিশরীয়রা বহু দেব-দেবীতে বিশ্বাস করত। তাদের মধ্যে রা, ওসিরিস, আইসিস, এবং হোরাস ছিল প্রধান।

মিশরীয়রা চিত্রলিপি বা হায়ারোগ্লিফিকস লেখনপদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিল। 

খুফু, তুতানখামেন, এবং রামসেস দ্বিতীয় ছিলেন এই সভ্যতার বিখ্যাত ফারাও রাজা। 

পার্সিয়ান, গ্রিক এবং অবশেষে রোমানরা মিশরের অভ্যন্তরীন দুর্বলতার সুযোগ নেয় এবংবার বার আক্রমণ করে। খ্রিস্টপূর্ব ৩০ সালে রোমানরা মিশরপুরোপুরি দখল করে নেয়। রোমান দখলের পর মিশরীয় সভ্যতার আর কোন নিজস্ব রাজত্ব আর অবশিষ্ট ছিল না।

৩. সিন্ধু সভ্যতা 

আমাদের এই অঞ্চলে মানে ভারত ও পাকিস্তানে সিন্ধু নদীর তীরে গড়ে ওঠেছিল একটি মহান সভ্যতা। সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০-১৩০০। এর বিখ্যাত শহর ছিল মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা।

এই সভ্যতার শহরগুলো ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত। উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল, যেখানে প্রতিটি ঘর থেকে পানি বের করার বিশেষ ব্যবস্থা ছিল এবং পুরো শহর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত ছিল। যা সেসময়ে অন্যকোন সভ্যতার মধ্যে পাওয়া যায়নি।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর মতো শহরে বিশাল ভবন, গ্রানারি, বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক এবং অন্যান্য স্থাপনা ছিল। িন্ধু সভ্যতার িজ্ব চিত্রলিপি িল, যা জও পুরোপুরি উদ্ধার করা যায়নি ।

তবে পরিবর্তিত জলবায়ু ও নদীপথের বদলের কারণে এটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়। আর্যদের আক্রমণ সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের পিছনে ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করেন কিছু প্রত্নতত্ত্ববিদ।

৪. ফিনিশীয় সভ্যতা 

ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের একটি প্রাচীন বণিক ও সমুদ্রবহুল সভ্যতা ছিল ফিনিশীয় সভ্যতা, যা মূলত বর্তমান লেবানন, সিরিয়া, এবং ইসরায়েলের উপকূলীয় অঞ্চলে বিকশিত হয়েছিল। 

এটি খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে শুরু হয়ে, প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৯ সালে পার্সিয়ানদের হাতে পতিত হয়। এই সভ্যতার প্রধান শহর ছিল টাইর ও সাইডন।

ফিনিশীয়রা ছিল দক্ষ নাবিক এবং বণিক। তারা মূল্যবান পণ্য যেমন রঙিন কাপড়, গ্লাস এবং সিডার কাঠ রপ্তানি করত। 

ফিনিশীয়রা এই সভ্যতার মানুষেরা আলফাবেটিক লিপির উদ্ভাবন করে যা পরবর্তীতে গ্রিক ও ল্যাটিন লিপির ভিত্তি স্থাপন করে। ফিনিশীয়রা বহু দেবদেবীতে বিশ্বাস করত।

আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট খ্রিস্টপূর্ব ৩৩২ সালে ফিনিশীয়দের ওপর শেষ বড় আঘাত হানে। আলেকজান্ডারের বিজয়ের ফলে ফিনিশীয় শহরগুলো গ্রিক সংস্কৃতির প্রভাবের অধীনে চলে যায়। শেষ হয় একটি  প্রাচীন সভ্যতার যুগ।

৫. চীনের প্রাচীন সভ্যতা 

হুয়াং হো ও ইয়াংজি নদীর উপত্যকয় খ্রিস্টপূর্ব ২০০ সালে ত্থা চীনা সভ্যতার। তারা কাগজ, পোর্সেলিন, এবং কম্পাস আবিষ্কার করে সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

সিন্ধু সভ্যতার মতো চীনারাও চিত্রলিপির ব্যবহার করত।

কনফুসিয়ানিজম, তাওবাদের মতো দর্শন এবং ধর্ম চীনা সংস্কৃতির মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করত।

বিখ্যাত রাজা হিসেবে পরিচিত হান রাজবংশের সম্রাট ও পরবর্তীতে মিং রাজবংশের সম্রাটরা। শত্রুদের থেকে চীনের সুরক্ষায় ‘গ্রেট ওয়াল’ তৈরি করেন। রক্ষায় যা আজও  বিশ্বে চীনের আর্শ্চয্য হয়ে ঠিকে আছে।

তবে মঙ্গোলদের আক্রমণ এবং রাজনৈতিক দুর্বলতার কারনে প্রাচীন চীনের পতন ঘটে। তবে চীনের প্রাচীন সভ্যতা কখনো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, বরং বিভিন্ন পরিবর্তন এবং নতুন রাজবংশের মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে ।

৬. মায়া সভ্যতা 

মধ্য আমেরিকার মেক্সিকোয় খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ – খ্রিস্টীয় ১৫০০ সালে মায়া সভ্যতা গড়ে ওঠে। গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যার জ্ঞানের জন্য বিখ্যাত হয়েছিল এই সভ্যতার মানুষ।

মায়া সভ্যতার অঞ্চলটি বর্তমানে ‘মেক্সিকো (ইউকাতান উপদ্বীপ)’, ‘গুয়াতেমালা’, ‘বেলিজ’, ‘হন্ডুরাস’, এবং ‘এল সালভাদর’ অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল ।

মায়াদের নিজস্ব একটি চিত্রলিপি ছিল। অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিল মায়ারা। তারা শুন্যের ধারণা নিয়ে গণিতের উন্নত একটি পদ্ধতি তৈরি করেছিল। মিশরের মতোই বিশাল পিরািড তৈরি করেছিল। মায়াের ধর্মে হুদেতাবাদ ছিল এং বিভিন্ন দেবতার পূজা করতোতারা।

১৫ শতকে স্পেনীয়রা মায়া অঞ্চল আক্রমণ করে এবং অনেক মায়া জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। এছাড়া অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও পরিবেশগত সমস্যার কারণে মায়া সভ্যতা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যায়।

৭. জেরুজালেম-কেন্দ্রিক ইহুদি সভ্যতা 

ইহুদী সভ্যতা, বিশেষ করে জেরুজালেম-কেন্দ্রিক ইহুদী সভ্যতা, খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ সালের দিকে ইসরায়েলের প্রাচীন রাজা দাউদ এবং তার পুত্র সোলোমনের সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। মূসা, দাউদ, ও সোলায়মান ছিলেন এই সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

ইহুদি সভ্যতার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল একেশ্বরবাদ, যেখানে তারা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর, যিহোবার পূজা করত।

মূসা ছিলেন ইহুদি ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় নেতা, যিনি ইহুদিদের মিশর থেকে মুক্তি দেন এবং তোরাহ (ধর্মগ্রন্থ) প্রবর্তন করেন। দাউদের পুত্র সোলোমন, ইহুদি সভ্যতার শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দেন।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৬ সালে ব্যাবিলনের রাজা নেবুচাদনেৎজার দ্বিতীয় ইহুদিদের প্রথম মন্দির ধ্বংস করেন এবং ইহুদিদের বন্দী করে ব্যাবিলনে নিয়ে যান।

খ্রিস্টপূর্ব ৬৩ সালে রোমান সাম্রাজ্যের হাতে জেরুজালেম চলে যায়। খ্রিস্টাব্দ ৭০ সালে রোমানরা দ্বিতীয় মন্দির ধ্বংস করে এবং ইহুদিদের অধিকাংশকে জেরুজালেম থেকে বিতাড়িত করে।

বাইবেলের ধর্মীয় শিক্ষা ও রাজত্বের সয়কা এখানেই নি্ধারিত। বিভিন্ন সাম্রাজ্যের হাতে জেরুজালেমের পতন ঘটে, তবে ইহুদি ঐতিহ্য এখনও টিকে আছে।

৮. গ্রীক সভ্যতা 

 গ্রিক সভ্যতার প্রাথমিক ধাপটি শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ সালে, যা মাইসেনীয় সভ্যতা নামে পরিচিত। ইউরোপের প্রথম সভ্যতা মাইসেনীয় সভ্যতার পতনের পর প্রায় ৪০০ বছরের এক অন্ধকার যুগে প্রবেশ করে ইউরোপ। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সাল থেকে গ্রিক সভ্যতার নতুন এক ধাপের সূচনা হয়, যা দর্শন, গণিত ,নাটক এবং  নতুন ধারার রাজনীতির জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠে।

সক্রেটিস, প্লেটো, আরিস্টটল, এবং রাজা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের মতো মহান ব্যক্তিত্বরা গ্রীস সভ্যতাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।

চিকিৎসাবিদ্যার জনক হিপোক্রেটিসকে, গণিতবিদ পিথাগোরাস, জ্যামিতির জনক ইউক্লিড, সাহিত্যিক হোমারের জন্ম এই গ্রীক সভ্যতার সময়কালে।

প্রাচীন গ্রিসের অ্যাথেন্স, স্পার্টা এবং থিবস ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী শহর রাস্ট্র।

গ্রিক সভ্যতায় দেব-দেবী পূজার প্রচলন ছিল। জিউস, হেরা, পসাইডন, এবং অ্যাথেনার মতো দেব-দেবী গ্রিক জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতেন।

খ্রিস্টপূর্ব ১৪৬ সালে রোমানরা গ্রীস দখল করে এবং গ্রিক সভ্যতা রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। রোমানরা গ্রিক সংস্কৃতিকে গ্রহণ করলেও, গ্রিক সভ্যতার স্বাধীনতা ও স্বকী়া বিলীন য়ে যায়।

৯. রোমান সভ্যতা 

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৭৫৩ সালে রোম শহরের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শুরু হয় রোমান সভ্যতার এবং প্রায় এক হাজার বছর ধরে বিস্তৃত ছিল।

রোমান সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল তাদের প্রশাসনিক দক্ষতা এবং আইনব্যবস্থা। এটি একটি বহুজাতিক সাম্রাজ্য ছিল, যা ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে একত্রিত করে শাসন করতে সফল হয়েছিলেন তারা।

জুলিয়াস সিজার ও অগাস্টাস ছিলেন রোমের বিখ্যাত শাসক ছিলেন। খ্রিস্টান ধর্মের প্রথম সম্রাট ‘কনস্ট্যানটাইন’, তার নাম দিয়েই কনস্টান্টিনোপল (বর্তমান ইস্তাম্বুল) শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

খ্রিস্টান ধর্মের প্রসার এবং ধর্মীয় মতপার্থক্য রোমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছিল। রোমান সভ্যতার পতন হলেও এর আইন, স্থাপত্য, এবং সংস্কৃতি আজও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে এবং এটি আধুনিক সভ্যতার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক দুর্নীতি এবং সেনাপতিদের ক্ষমতার লড়াইয়ের কারণে কেন্দ্রীয় শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে।

জার্মানিক উপজাতিরা বারবার আক্রমণ চালায় এবং ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে তারা পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্য দখল করে। পতন ঘটে শক্তিশালী, দীর্ঘমেয়াদি ও প্রভাবশালী এক সভ্যতার ।

 ১. পরস্য ভ্যতা 

পারস্য সভ্যতা, যা প্রাচীন ইরানের সভ্যতা হিসেবে পরিচিত, খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০ সালে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের দ্বারা  প্রথম পারস্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।

এই সভ্যতা অত্যন্ত দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য পরিচিত ছিল। পারস্য সভ্যতায় ধর্মীয় সহনশীলতা সুনাম ছিল।

পারস্য সভ্যতার কেন্দ্রস্থল ছিল ‘বর্তমান ইরান’। তবে পারস্য সাম্রাজ্য বর্তমান ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, এবং তুরস্কসহ আরও অনেক অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল।

পারস্যের বিখ্যাত “রয়্যাল রোড” বা রাজকীয় সড়ক ব্যবস্থা ছিল যা সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হতো।পারস্য সভ্যতায় জরথ্রুস্ট্র ধর্ম প্রচলিত ছিল, যা দেবতা আহুর মাজদা পূজার প্রচলন করেছি

যেখানে সাইরাস ও দারায়ুস মহান রাজা ছিলেন। দারায়ুসের পুত্র জেরাক্সেস পারস্য সাম্রাজ্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ শাসক ছিলেন।  

এছাড়া এলামাইট সাম্রাজ্য (খ্রিষ্টপূর্ব ২৭০০ – ৬৪০), মেদীয় সাম্রাজ্য (খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০ – ৫৫০), সাসানীয় সাম্রাজ্য (খ্রিষ্টাব্দ ২২৪ – ৬৫১), ইসলামী খিলাফতের অধীনে পারস্য (৬৫১ – প্রায় ৯০০), সাফাভীয় সাম্রাজ্য (১৫০১ – ১৭৩৬)  এমন আরো অনেক সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল ইরানে।

খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০ সালে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট পারস্য দখল করলে  পতন ঘটে প্রাচীন বিশাল পারস্য সভ্যতার।

১১. অ্যাজটেক সভ্যতা 

অ্যাজটেক সভ্যতা, মধ্য অ্যােরকার একট গুরুত্বপূর্ণ ভ্যতা হিসেবে পরিচিত, যা ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের ম্যে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৫২১ সালে স্প্যানিশদের দ্বারা ধ্বংস হয়। এটি মূলত বর্তমান মেক্সিকোর কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত ছিল।

তারা পিরামিড মন্দির এবং সমৃদ্ধ নগরী টেনোচটিটলানের জন্য বিখ্যাত ছিল।

অ্যাজটেকরা অত্যন্ত উন্নত কৃষি প্রযুক্তির জন্য পরিচিত ছিল। তারা বাণিজ্যের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠেছিল।  

‘মোকার ক্যাপাক’ ও মোটেকুজুমা II’ ছিলেন অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের সবচেয়ে  প্রভাবশালী সম্রাট । 

অসংখ্য দেব-দেবীর পূজা করতো অ্যাজটেকরা। অ্যাজটেকদের মানব বলিদানের অভ্যাস তাদের শত্রুদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল এবং এই বিষয়টি তাদের সম্পর্কে বৈরী মনোভাব সৃষ্টি করে।

 স্প্যানিশ আক্রমণের ফলে ১৫২১ সালে অ্যাজটেক সভ্যতার পতন ঘটে।

১২. ইনকা সভ্যতা 

ইনকা সভ্যতা, যা দক্ষিণ আমেরিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা হিসেবে পরিচিত, আনুমানিক ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৫৩৩ সালে স্প্যানিশ কনকুইস্তাডর ফ্রান্সিস্কো পিজারো দ্বারা ধ্বংস হয়। ইনকা সভ্যতা মূলত ‘আন্দেস পর্বত’ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ছিল।

পেরুর ইনকা সভ্যতা তাদের আশ্চর্য স্থাপত্য, বিশেষত মাচুপিচুর জন্য বিখ্যাত ছিল। 

ইনকা সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রধা সম্রা ‘পচাকুেক ইনকা ।‘তুপাক ইনকা’ ‘হুয়ানা কাাক’ ও সম্রাট আতাহুয়ালপা ছিল ইনকার উল্লেখযোগ্য শাসক।

ইনকারা ‘কেচুয়া’ ভাষা ব্যবহার করতেন, যা এখনও অনেক অঞ্চলে প্রচলিত আছে। ইনকারা সূর্য দেবতার পূজা করতেন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন করতেন। 

১৫৩৩ সালে পিজারো ও তার স্প্যানিশ বাহিনী ইনকাদের রাজা আটাহুয়ালপাকে বন্দী করে হত্যা করে। ইনকা সভ্যতার সোনালি যুগের অবসান ঘটে পিজারোর এই আক্রমণের মাধ্যমে।

রহস্যময় ও প্রভাবশালী প্রাচীন সভ্যতাগুলো শুধু নিজেদের সময়েই নয়, আজও মানব সভ্যতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। মেসোপটেমিয়া, মিশর, সিন্ধু, মায়া, ইনকা, গ্রিক, রোমান, ফিনিশিয়ান, আশুরিয়ান, সুমের এবং পারসিয়ান সভ্যতা—এদের প্রতিটি সভ্যতার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, শক্তিশালী শাসক এবং উদ্ভাবনী কৌশল রয়েছে, যা মানব ইতিহাসে অসাধারণ কীর্তির সাক্ষর রেখেছে। 

ইতিহাসের প্রাচীন রহস্যময়তার সঙ্গে এদের অবদান আমাদের শুধু অীতে স্মতিচারণ করে া, বরং ভবিষ্যতের থচলায় অনুপ্রেরণা যোগায়।


লিখাটি সম্পূর্নভাবে AI এর সহায়তায় লিখা হয়েছে। তবে কিছুটা পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে । ……..বিভাগীয় সম্পাদক


৩১ thoughts on “সভ্যতার সন্ধানে: রহস্যময় প্রাচীন সভ্যতা

  1. Ata Tohumculuk 25 Adet Tohum Badem Salatalık Köy Salatalığı Tohumu Yerli Tohum Bol Verimli. Kendi sebze ve meyvesini yetiştirmek isteyenler için kullanılan tohum son derece önemlidir. Tohum, koruyucu bir dış kaplama içine alınmış bir embriyonik bitkidir. Tohum oluşumu, açık tohumlular ve kapalı tohumlular bitkileri dahil olmak üzereTürkiye’ nin tercihi ödüllü marka Tohumevi. Sertifikalı, tohum, çiçek soğanı, fide, fidan ve saksılı çiçek çeşitlerinde online alışveriş https://www.tohumdunyasi.com.tr/

  2. Ata Tohumculuk 25 Adet Tohum Badem Salatalık Köy Salatalığı Tohumu Yerli Tohum Bol Verimli. Kendi sebze ve meyvesini yetiştirmek isteyenler için kullanılan tohum son derece önemlidir. Tohum, koruyucu bir dış kaplama içine alınmış bir embriyonik bitkidir. Tohum oluşumu, açık tohumlular ve kapalı tohumlular bitkileri dahil olmak üzereTürkiye’ nin tercihi ödüllü marka Tohumevi. Sertifikalı, tohum, çiçek soğanı, fide, fidan ve saksılı çiçek çeşitlerinde online alışveriş https://cngdental.com.tr/

  3. شركة Bwer هي أحد الموردين الرئيسيين لموازين الشاحنات ذات الجسور في العراق، حيث تقدم مجموعة كاملة من الحلول لقياس حمولة المركبات بدقة. وتغطي خدماتها كل جانب من جوانب موازين الشاحنات، من تركيب وصيانة موازين الشاحنات إلى المعايرة والإصلاح. تقدم شركة Bwer موازين شاحنات تجارية وموازين شاحنات صناعية وأنظمة موازين جسور محورية، مصممة لتلبية متطلبات التطبيقات الثقيلة. تتضمن موازين الشاحنات الإلكترونية وموازين الشاحنات الرقمية من شركة Bwer تقنية متقدمة، مما يضمن قياسات دقيقة وموثوقة. تم تصميم موازين الشاحنات الثقيلة الخاصة بهم للبيئات الوعرة، مما يجعلها مناسبة للصناعات مثل الخدمات اللوجستية والزراعة والبناء. سواء كنت تبحث عن موازين شاحنات للبيع أو الإيجار أو التأجير، توفر شركة Bwer خيارات مرنة لتناسب احتياجاتك، بما في ذلك أجزاء موازين الشاحنات والملحقات والبرامج لتحسين الأداء. بصفتها شركة مصنعة موثوقة لموازين الشاحنات، تقدم شركة Bwer خدمات معايرة موازين الشاحنات المعتمدة، مما يضمن الامتثال لمعايير الصناعة. تشمل خدماتها فحص موازين الشاحنات والشهادات وخدمات الإصلاح، مما يدعم موثوقية أنظمة موازين الشاحنات الخاصة بك على المدى الطويل. بفضل فريق من الخبراء، تضمن شركة Bwer تركيب وصيانة موازين الشاحنات بسلاسة، مما يحافظ على سير عملياتك بسلاسة. لمزيد من المعلومات حول أسعار موازين الشاحنات، وتكاليف التركيب، أو لمعرفة المزيد عن مجموعة موازين الشاحنات ذات الجسور وغيرها من المنتجات، تفضل بزيارة موقع شركة Bwer على الإنترنت على bwerpipes.com

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x